
আদা বাংলাদেশের মানুষের কাছে খুব প্রয়োজনীয় মসলা ফসল হিসেবে পরিচিত। আদা শরীরের জন্য খুব উপকারী। এতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট, যা শরীরের রোগ-জীবাণুকে ধ্বংস করে। জ্বর জ্বর ভাব, গলা ব্যথা ও মাথাব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। তবে রান্না করার চেয়ে কাঁচা আদার পুষ্টিগুণ বেশি। মাইগ্রেনের ব্যথা ও ডায়াবেটিস জনিত কিডনির জটিলতা দূর করে আদা।



পুরানো আমাশয়-
বহুদিনের আমাশয়ে যারা ভুগছেন, কিছুতেই সারছে না, এক্ষেত্রে আদাকে শুকিয়ে গুঁড়ো করে, এক গ্রাম পরিমাণ গুঁড়ো হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে খেতে হবে। তবে নিয়মিত খাওয়া দরকার। এতে আম পরিপাক হবে এবং আমাশয় কমে যাবে।
মাড়ি ফুলে গেলে-
দাঁতের গোড়ায় যন্ত্রণা এবং মাড়ি ফুলে গেলে, আধা কাপ হালকা গরম পানিতে দুচামচ কাঁচা আদার রস মিশিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট মুখে রাখতে হবে। দিনে দুবার করে তিন দিন প্রয়োগ করলে মাড়ি ফূলা এবং যন্ত্রণা দুই-ই কমবে।



পেটে বায়ু জমলে অনেক সময় সে বায়ু ওপরদিকে উঠে আসে ফলে বুকে যন্ত্রণা বা অবিরাম হিক্কা হতে থাকে। আধা কাপ পারিমাণ ছাগলের দুধের সঙ্গে আধা চামচ আদার রস মিশিয়ে খেলে হিক্কা কমে যাবে।
রক্তপাত বন্ধ করতে হবে-
শরীরের কোথাও অনেকটা কেটে গেলে কিংবা রক্তপাত বন্ধ হচ্ছে না, এ সময় খানিকটা শুকানো আদার গুড়ো নিয়ে কাটা স্থানে চেপে ধরলে রক্তপাত বন্ধ হবে এবং কাটা স্থানটি তাড়াতাড়ি জোড়া লাগতে সাহায্য করবে।
সর্দি জ্বর-
হঠাৎ সর্দি হয়েছে নাক দিয়ে পানি পড়ছে কিংবা অল্প অল্প শীত করছে জ্বর ভাব রয়েছে সেক্ষেত্রে দুই চামচ মধুর সঙ্গে এক চামচ আদার রস মিশিয়ে দিনে দুবার দুই দিন খেলে অবশ্যই উপকার হবে।



বসন্ত রোগে-
বসন্তের গুটি বের হচ্ছে না, গুটি তাড়াতাড়ি বের হওয়া দরকার, এ অবস্থায় আদা খুবই ফলদায়ক। এক চামচ কাঁচা আদার রসের সঙ্গে সমপরিমাণ তুলসী পাতার রস মিশিয়ে খেলে গুটি তারাতারি বেরিয়ে যাবে।
ক্ষিদে বাড়াতে-
কিছুই খেতে ইচ্ছে হয় না, অর্থাৎ ক্ষুধা মন্দা এবং খুখে অরুচি, দুপুরে খাবার আগে সৈন্ধব লবন দিয়ে একটু আদা খেতে হবে। এতে ক্ষিধে বাড়বে এবং মুখের রুচিও ফিরে আসবে।
পাকস্থলী ও হজমশক্তি বৃদ্ধিতে-
দুই থেকে তিন গ্রাম পরিমাণ কাঁচা আদার সঙ্গে সামান্য পরিমাণ বিট লবন মিশিয়ে আহারের পর দিনে দুবার সেব্য। ১৫-২০ দিন নিয়মিত সেবন করে যাওয়া আবশ্যক।



কাশি ও স্বর পরিস্কারে-
আদার রস এক চা চামচ, তুলসি পাতার রস এক চামচ, মধু দুই চামচ একত্রে মিশিয়ে প্রত্যহ দুই থেকে তিন বার সেব্য। সাত থেকে ১০ দিন সেবন করে যাওয়া আবশ্যক।
মুখের দুর্গন্ধ দূর করে এলাচ…
সুস্বাদু খাবার তৈরিতে এলাচ একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মশলা। রান্নার পাশাপাশি পানের স্বাদ বৃদ্ধিতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে এলাচ। এলাচের রয়েছে নানা ভেষজও গুণ যা শরীরে নানা সমস্যা দূর করে থাকে। এলাচের স্বাস্থ্যগুণ;
হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে-
২ বা ৩টি এলাচ, ১টি ছোট আদার টুকরো, ২-৩ টি লং এবং কয়েকটি ধনিয়া একসাথে গুঁড়ো করে নিন। এটি গরম পানিতে মিশিয়ে পান করুন। এটি হজমশক্তি বৃদ্ধি করে গ্যাস, বমি বমি ভাব দূর করে থাকে।



মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে-
খাবার খাওয়ার পর এক টুকরো এলাচ কিছুক্ষণ চিবিয়ে নিন। অথবা এলাচ চা পান করুন প্রতি দিন সকালে। এটি আপনার পাচনতন্ত্র শক্তিশালী করে তোলে। এর অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান মুখের দুর্গন্ধ দূর করে থাকে।
হেচঁকি দূর করতে-
আপনি যদি ঘন ঘন হেঁচকি সমস্যায় ভুগে থাকেন, তবে এলাচি খাওয়া শুরু করুন। এটি আপনার পেশি রিল্যাক্স করে হেঁচকি দূর করে থাকে।
ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দূর-
এলাচি একটি ভেষজ উপাদান। এটি শরীরে অভ্যন্তরীণ ফাঙ্গাস, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া দূর করে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।



ক্তস্বল্পতা দূর করতে-
এক বা দুই চিমটি এলাচ গুঁড়ো এবং হলুদ গুঁড়ো এক গ্লাস গরম দুধের সাথে মিশিয়ে নিন। এরসাথে অল্প পরিমাণে চিনি মিশিয়ে নিতে পারেন। প্রতি রাতে এটি পান করুন। এটি রক্তস্বল্পতা দূর করে দুর্বলতা দূর করে থাকে। এলাচে রিবোফ্লাবিন, ভিটামিন সি, নিয়াচিন আয়রন, কপার রক্ত স্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।
অ্যাসিডিটি দূর করতে-
সমপরিমাণে এলাচ গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো, মৌরি একটি প্যানে ভেঁজে গুঁড়ো করে নিন। এক কাপ গরম পানিতে আধা চা চামচ এই গুঁড়ো মিশিয়ে নিন এবং পান করুন। এটি অ্যাসিডিটি , পেটের গ্যাস এবং পেট ফাঁপা রোধ করে থাকে। বাচ্চাদের গ্যাসের সমস্যা দূর করে থাকে এই পানীয়।