আপনার শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব হয়েছে কিনা কেমন করে বুঝবেন

1493

আপনার শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব- ক্যালসিয়ামের গুরুত্ব শরীর গঠনের জন্য অনেক। ক্যালসিয়াম শরীরের হাড় মজবুত করতে জরুরী। কেটে গেলে র”ক্ত জমাট বাঁধতে সহায়ক। এটি শরীরের বিকাশ ও মাংশপেশী গঠনে প্রয়োজন।

ক্যালসিয়াম প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় দুগ্ধ জাতিও খাবারে যেমন দুধ, চিজ, দই, সামুদ্রিক খাবারে এবং সবুজ সবজিতে। বর্তমানে আমরা সবাই অস্বাস্থ্যকর খাবার, জাঙ্ক ফুড, পিঁজা, ভাজাভুজি, বার্গার এবং তেলেভাজা নিয়ে মেতে উঠেছি যা পুষ্টি নষ্ট করছে।

আমাদের জীবন যাপন বর্জিত করছে সমস্ত রকম শারীরিক কার্যকলাপ, এটাই অন্যতম কারন অস্বাস্থ্যকর জীবনের। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ প্রস্তাব দিয়েছে যে পুরুষ ও মহিলা সবারই প্রতিদিন ১০০০ MG করে ক্যালসিয়াম দরকার।ক্যালসিয়ামের অভাবে আমাদের শরীরে যে মা’রা’ত্ম’ক প্রভাব পড়ে বা যে লক্ষণগুলো দেখা তা হলোঃ-

১। পায়ে খেঁচুনি ধরাঃ যদি আপনারা আপনাদের পায়ে খেঁচুনি ধরা অনুভব করেন, তাহলে এটা ক্যালসিয়ামের অভাবের প্রথম লক্ষণ। এর প্রতিকারে আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে যে আপনার রোজকার খাবারে যথেষ্ট ক্যালসিয়াম রয়েছে। তাছাড়া, ক্লেভেলান্ড ক্লিনিক বলেছে যে শোওয়ার আগে পা প্রসারিত করুন তাতে ব্যথা কিছু কম লাগবে। এটা কি বিশ্বাস করেন? না করলে একবার চেষ্টা করে দেখুন!

২। দাঁতের গর্তঃ আগের চেয়ে দাঁতের গর্ত বাড়ছে? শুধু মিষ্টিকে দোষ দেবেন না। যখন আমাদের শরীর খাবার থেকে যথেষ্ট ক্যালসিয়াম পায় না, এটি অন্যান্য উৎস থেকে খোঁজে, যেমন আমাদের দাঁত।

৩। অসাড় অবস্থাঃ পায়ে খেঁচুনি ধরার মতো ক্যালসিয়ামের অভাবের জন্যে আমাদের হাতের স্প্ল্যাশাল স্নায়ু নষ্ট হয়ে যায়। যদি আপনি আগুলের ওপর অস্থিরতা বা ঝলকানি সংবেদন অনুভব করেন তাহলে এখুনি ক্যালসিয়ামের পরিমাণ পরীক্ষা করান।

৪। ভঙ্গুর নখঃ দাঁত ও শরীরের মতো নখেও ক্যালসিয়াম থাকে। অতএব, একটি ক্যালসিয়াম-অনাহারী শরীর পুষ্টির জন্য সেখান থেকে ক্যালসিয়াম নেবে। এটার জন্যে আমাদের নখ ভঙ্গুর হয়ে যায়, যদি না আমরা বেশি ক্যালসিয়াম গ্রহণ না করি।

৫। ঘুমের অসুবিধাঃ মেডিকেল তথ্য আনুসারে ক্যালসিয়াম সেরোটোনিন তৈরি করতে সাহায্য করে, যা কিনা ঘুমের জন্যে দায়ি। যখন আপনি গভীর ঘুমে যান, তখন আপনার ক্যালসিয়ামের লেভেল বেড়ে যায়। সুতরাং যদি আপনি রাতে কম ঘুমান তাহলে আপনার শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব বাড়বে।

৬। বাজে অঙ্গবিন্যাসঃ কম ক্যালসিয়াম মানে, দুর্বল হাড় এবং দুর্বল হাড় মানে দুর্বল শরীর। আপনার শরীর এই দুর্বলতার জন্যে জবুথবু হয়ে যাবে। এই বাজে অঙ্গবিন্যাসের জন্যে পিঠে ও কাঁধে ব্যাথা বাড়বে।

৭। হৃদরোগের আক্রমণঃ জৈবপ্রযুক্তি জাতীয় কেন্দ্র বলছে যে ক্যালসিয়াম পেশী সংকোচন এবং নিউরোট্রান্সমিটার রিলিজ দরকারি। সুতরাং ক্যালসিয়ামের অভাব হৃদরোগের আ’ক্র’ম’ণে’র কারন হতে পারে।

৮। স্মৃতিশক্তি হ্রাসঃ রিমোট কোথায় মনে করতে পারছেন না? ক্যালসিয়ামের অভাবের জন্যে স্নায়বিক উপসর্গগুলি হয় যেমন স্মৃতিশক্তি হ্রাস ও ভুলে যাওয়া।

অনেক খাবার রয়েছে যেগুলো নিয়মিত খেতে পারলে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মিটিয়ে হাড় মজবুত করবে! আসুন এ বিষয়ে সবিস্তারে জেনে নেওয়া যাক…

১. মজবুত হাড় পেতে নিয়মিত ব্রোকলি খেয়ে যেতে পারেন। ক্যালসিয়ামে ভরপুর এই সবজিটি শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে।

২. টক জাতীয় ফল হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। কমলালেবু, বাতাবি লেবু, পাতিলেবুর মতো যে কোন লেবুতেই থাকে ভিটামিন সি আর সাইট্রিক অ্যাসিড যা শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে।

৩. শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মেটাতে সয়াবিন খুবই উপকারি! এক কাপ (১০০ গ্রাম) সয়াবিনে প্রায় ১৭৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। তাই নিয়মিত সয়াবিন খান। উপকার পাবেন।

৪. শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণে নিয়মিত ঢেঁড়স খেয়ে দেখুন। ৫০ গ্রাম ভেন্ডি বা ঢেঁড়সে প্রায় ১৭২ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।

৫. কাঠ বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। এক মুঠো (১০০ গ্রাম) কাঠ বাদামে প্রায় ২৬৬ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম রয়েছে। তাই শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দ্রুত পূরণ করতে প্রতিদিন খেতে পারেন এক মুঠো কাঠ বাদাম।

৬. শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মেটাতে তিলের বীজ খুবই উপকারী! কারণ তিলের বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। ১০০ গ্রাম কাঁচা তিলের বীজে ১ হাজার মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম রয়েছে।

দাঁতের হলদে ভাব দূর করার সহজ উপায়…

দাঁতের হলদে ভাব দূর করার সহজ উপায়- দাঁতের হলদে ভাব নিয়ে অনেকেই চিন্তিত থাকেন। তাহলে আজ থেকেই কিছু ঘরোয়া পদ্ধতিগুলিকে কাজে লাগানো শুরু করে দিন।

কলার খোসা- কলার খোসার সাদা দিকটি নিয়মিত দাঁতে ঘষলে দাঁতের হলদেটে ভাব দ্রুত কেটে যায়। তবে কলার খোসা দিয়ে দাঁত ঘষার পর অবশ্যই হলকা গরম পানি দিয়ে ভালো করে কুলকুচো করে নিতে হবে।

লবণ- দাঁতকে পরিষ্কার রাখতে বহু যুগ ধরেই লবণের ব্যবহার হয়ে আসছে। কারণ লবণ দাঁতের পুষ্টির ঘাটতি দূর করার পাশাপাশি দাঁতের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই দাঁতের হলদে ভাব কাটানোর ক্ষেত্রে লবণকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরাও।

এক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে কাঠকয়লার সঙ্গে নুন মিশিয়ে সেই মিশ্রণ দিয়ে দাঁত মাজতে হবে। কয়েক সপ্তাহ এই মিশ্রণ দিয়ে দাঁত মাজলেই দাঁতের হলদে ভাব অনেকটা কমে যাবে।

কমলা লেবুর খোসা- দাঁতের সৌন্দর্য ফেরাতে কমলা লেবুর খোসা দারুণ কার্যকরী। প্রতিদিন রাতে সামান্য কমলা লেবুর খোসা নিয়ে দাঁতে একটু সময় নিয়ে ঘষুন। নিয়মিত এমনটা করলেই দাঁতের হলদে ভাব অনেকটা কমে যাবে।

খাবার সোডা- দাঁতের হলদেটে ভাব কাটাতে খাবার সোডার কোনও বিকল্প মতো সহজলভ্য বিকল্প আর নেই। এ ক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে টুথপেস্টের সঙ্গে খুব সামান্য পরিমাণে খাবার সোডা মিশিয়ে দাঁত মাজুন। তারপর উষ্ণ জল দিয়ে ভালো করে কুলকুচো করে মুখটা ধুয়ে নিন। সপ্তাহে অন্তত বার দু’য়েক এই ঘরোয়া পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে দাঁত মাজলে দ্রুত সুফল মিলবে।

তুলসী পাতা- তুলসী পাতা দাঁতের স্বাস্থ্যের পক্ষে বেশ উপকারী। বেশি করে তুলসী পাতা নিয়ে সেগুলোকে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। পাতাগুলো একেবারে শুকিয়ে গেলে সেগুলোকে গুঁড়ো করে যেকোনো টুথপেস্ট মিশিয়ে নিয়মিত ব্রাশ করলে দাঁতের হলুদ ভাব একেবারে চলে যায়। সেই সঙ্গে দাঁতে বিভিন্ন রোগের প্রকোপও হ্রাস পায়।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে রসুন…

কাঁচা রসুনের গুণের তুলনা করা যায় না। একে মহৌষধি বললেও ভুল হবে না। বয়স্কদের অনেকেই কাঁচা রসুন খাওয়ায় অভ্যস্ত। তারা কতটা লাভবান হন, জানলে আপনিও হাঁটবেন এই পথেই। চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, কাঁচারসুন রক্তের উচ্চচাপ দূর করে।

কোলেস্টরেল কমায়। হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে যায় রসুন খেলে। নিয়মিত শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা থাকলে দিনের বেলায় এক/দুই কোয়া কাঁচা রসুন খেলে ম্যাজিকের মতো ফল পাওয়া যাবে। খারাপ ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের সঙ্গে লড়তে সাহায্য করে কাঁচা রসুন। যক্ষা থেকে রক্ষা করে কাঁচা রসুন। নিয়মিত খেলে বাড়ে হজম শক্তি।

চিকিৎসকরা দেখিয়েছেন, কাঁচা রসুনে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যানসারকে দূরে রাখে। কোষ্ঠকাঠিন্য কমে, পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা দূর হয় কাঁচা রসুন খেলে। কাঁচা রসুন দাঁতের ব্যথায় কাজ দেয়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে। কৃমি ধ্বংস করে। অনিদ্রা, আঁচিলের সমস্যা দূর করে কাঁচা রসুন। ত্বককেও তরতাজা রাখে। রক্ষা করে চর্মরোগের হাত থেকে।

চুল পড়া কমাবে লাল শাক…

৩০ বছর বয়সের পর আমাদের শরীরে নানান সমস্যা দেখা যায়। সেই সব দূরে রাখতে লাল শাক খুবই উপযোগী। যদি প্রতিদিন লাল শাক খাওয়া যায় তাহলে খুবই উপকারি। এই লাল শাকের মধ্যে কিছু প্রয়োজনীয় উপাদান থাকে যা শরীরের পক্ষে উপকারি।

শাক-সবজি খাওয়ার পরামর্শ চিকিৎসকরা সব সময় দেন। আর এই শাক-সবজির মধ্যে অতি পরিচিত একটি হলো লাল শাক। নিয়মিত লাল শাক খেলে কী কী উপকার পাওয়া যায় তা দেখে নেওয়া যাক-

লাল শাক ভাল করে বেটে তার মধ্যে এক চামচ লবণ মিশিয়ে নিন। প্রতিদিন এই মিশ্রণটি খান। চুল পড়া কমে যাবে অনেকটাই। নিয়মিত লাল শাক খেলে কিডনির কার্যক্ষমতা বেড়ে যায়। এছাড়াও রক্ত পরিশুদ্ধ হয়ে। লাল শাকের মূল দিয়ে দাঁত মেজে, লবণ দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

এর ফলে দাঁতের মধ্যে থাকা হলুদ ভাব কেটে যায়। এছাড়াও দাঁত জনিত অন্যান্য সমস্যাগুলিও আর হয়ে না। লাল শাকে ভিটামিন সি থাকায় চোখের রেটিনার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, যা দৃষ্টি শক্তির উন্নতিতে সাহায্য করে। লাল শাক শরীরে রক্তের পরিমাণ বাড়ায়। তাই কেউ যদি অ্যানিমিয়ায়ে ভোগেন তাহলে আজ থেকেই খাওয়া শুরু করুন লাল শাক। যারা গ্লুকোমার সমস্যায় ভুগছেন, তারা প্রতিদিন এই শাক খান।

কিডনির কার্যক্ষমতা বাড়ায় লাল শাক…

নিয়মিত লাল শাক খেলে কিডনির কার্যক্ষমতা বেড়ে যায়। এছাড়াও রক্ত পরিশুদ্ধ হয়ে। এছাড়াও লাল শাক শরীরে রক্তের পরিমাণ বাড়ায়। তাই কেউ যদি অ্যানিমিয়ায়ে ভোগেন তাহলে আজ থেকেই খাওয়া শুরু করুন লাল শাক।

লাল শাকের মূল দিয়ে দাঁত মেজে, লবণ আনি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এর ফলে দাঁতের মধ্যে থাকা হলুদ ভাব কেটে যায়। এছাড়াও দাঁত জনিত অন্যান্য সমস্যা গুলিও আর হয়ে না।