আমিরাত পুলিশের আচরণে মুগ্ধ হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন ডাচ নারী

4141

আমিরাত পুলিশের আচরণে মুগ্ধ- সংযুক্ত আরব আমিরাতের পর্যটন পুলিশ সদস্যদের সহনশীল, মার্জিত ও সভ্য আচার-আচরণে মুগ্ধ হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন ইউরোপীয় এক পর্যটক। ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী ওই নারী পর্যটক হলেন নেদারল্যান্ডসের নাগরিক ক্রিশ্চিনা ডাফানো। আল-জাজিরা, ওয়ার্ল্ড নিউজ।

আমিরাতের পর্যটন বিভাগের মহাপরিচালকের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ডাচ নারী ক্রিশ্চিনা ডাফানো ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। শনিবার আবু ধাবি পুলিশের এক বিবৃতিতে তার ইসলাম ধর্ম গ্রহণের তথ্য জানানো হয়েছে, এবং এ সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি ছবি প্রকাশ করে।

কালেমা পাঠের পর ডাফানো তার নাম পরিবর্তন করে রাখেন নুরা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসলাম গ্রহণের পর শেখ জায়েদ গ্র্যান্ড মসজিদ পরিদর্শনে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন ওই নারী। পরে তাকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়।

আমিরাত পুলিশের ডেপুটি পরিচালক কর্নেল আহমাদ আলমুরাউই বলেন, ইসলাম ধর্মের রীতি অনুযায়ী, তাকে সহনশীল এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের দীক্ষা দেয় আমিরাতের পর্যটন পুলিশ।

সম্প্রতি ইউরোপে মানুষের ইসলাম সম্পর্কে জানার আগ্রহ বেড়েছে। বাড়ছে ইসলাম গ্রহণকারীর সংখ্যাও। ইতালির সরকারি সংস্থার হিসাবে এ সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অন্যান্য ধর্ম থেকে ইসলাম গ্রহণ করেছেন তারা। ইতালির এই চিত্র প্রমাণ করে ইউরোপে ক্রমবর্ধমান ধর্ম হিসেবে ইসলামের প্রসার ঘটছে। এরই অনন্য নজির ফ্রাংকো বারবাতোর মেয়ের ইসলাম গ্রহণ।

কার্টুন পত্রিকা শার্লি হেবদোতে উগ্রপন্থীদের হামলার পর হামলাকারীদের নিন্দা করতে গিয়ে ফ্রান্স এবং ইউরোপজুড়ে ইসলামের সমালোচনার বন্যা বয়ে যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, নতুন কারো ইসলাম গ্রহণ করা তো দূরের কথা, মুসলমানরাই সেখান হয়তো টিকে থাকতে পারবে না।

ভ’য়া’ব’হ বিষোদগারে মুসলমানদের জীবন অ’তী’ষ্ঠ হয়ে যাবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে উল্টা চিত্র। ওই ঘটনার পর ইসলাম গ্রহণের হার দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। ইমাম সাহেবরা জানাচ্ছেন, মসজিদে এসে ফরাসিরা কলেমা পড়ছেন।

গত সপ্তাহে এক নওমুসলিম আরটিএল রেডিওকে জানান, ‘ওই ঘটনাই আমাকে ইসলাম সম্পর্কে জানতে আগ্রহী করেছে, সবার কাছে সত্যিকারের ইসলামের রূপরেখা তুলে ধরেছে।’

ওই রেডিও’র ভাষ্যানুযায়ী, প্যারিসের গ্রেট মসজিদ ইসলামে ধর্মান্তরের ৪০টি সনদ বিতরণ করেছে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল মাত্র ২২টি। অর্থাৎ চলতি বছর ইসলাম গ্রহণের হার প্রায় ৫০ ভাগ বেড়ে গেছে।

স্ট্রাসবার্গ ও আবারভিলিয়ার্সেও ইসলাম গ্রহণের হার অনেক বেশি। এই দুটি নগরীতে ইসলাম গ্রহণ বেড়েছে ৩০ ভাগ। আর লিওঁ নগরীতে বেড়েছ ২০ ভাগ।

এসব শহরের মসজিদের ইমামরা বলছেন, নওমুসলিমদের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় তারা বিস্মিত। আরো বড় কথা হলো, নওমুসলিমদের মধ্যে বৈচিত্র্যও দেখা যাচ্ছে। তাদের একজন চিকিৎসক, একজন স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল, একজন পুলিশ অফিসার। তারা সবাই গ্রেট মসজিদে গিয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছেন।

শার্লি হেবদোতে হামলার কয়েক দিন পর ফরাসি পরিালক ইসাবেলে ম্যাটিতক তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ইসলাম গ্রহণের কথা প্রকাশ করেছিলেন। তার এই ঘোষণা ছিল অপ্রত্যাশিত, বিস্ময়কর।

প্যারিসে শার্লি হেবদোতে উ”গ্র”প”ন্থী”দে”র হামলায় ১৭ জন নি”হ”ত হয়েছিল। মহানবিকে (সা.) নিয়ে কার্টুন প্রকাশ করার প্রেক্ষাপটে এই হামলা চালানো হয়।

এই হা”ম”লা”য় সমালোচনায় মুখর হয়েছিল মুসলিম দেশ আর সংগঠনগুলো। তারা বলেন, এ ধরনের হা”ম”লা”কা”রী”দে”র সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা এ ধরনের কার্টুন না আঁকারও আহ্বান জানিয়েছেন।

এক রাতেই তৈরি সুজা মসজিদ!

দিনাজপুরের হিলি-ঘোড়াঘাটের মধ্যবর্তী চোরাগাছা গ্রামে অবস্থিত সুলতানি আমলের নির্মিত সুজা মসজিদ।

জনশ্রুতি আছে এই মসজিদ এক রাতে তৈরি করা হয়েছে। সুলতানি আমলের বিরল স্থাপত্য ধারায় নির্মিত সুজা মসজিদটি নামাজ কক্ষ ও বারান্দা দিয়ে দুই অংশে বিভক্ত।

নামাজ কক্ষে জায়গার পরিমাণ সাত দশমিক ৮৪ মিটার আর বারান্দা লম্বায় চার দশমিক ৮৪ মিটার ও চওড়া দুই দশমিক ১২ মিটার। চুন সুরকির সাহায্যে ছোট আকৃতির ইট দ্বারা নির্মিত মসজিদের দেওয়াল এক দশমিক ৮০ মিটার প্রশস্ত।

নামাজ কক্ষের ছাদ বাঁকা আকৃতির গম্বুজ দ্বারা আবৃত। বারান্দায় রয়েছে এক সারিতে অনুরুপ তিনটি গম্বুজ। তাছাড়া নামাজ কক্ষের চারকোণে চারটি ও বারান্দায় দুইটি পাথরের রুরুজ আছে।

মসজিদে প্রবেশের জন্য পূর্বদিকে তিনটি ও উত্তর-দক্ষিণে একটি খিলানকৃত প্রবেশপথ রয়েছে। বারান্দার উত্তর পাশে একটি প্রবেশপথ রয়েছে। এই মসজিদের স্থাপত্যশৈলীর সঙ্গে হোসেন শাহী (১৬’শ খ্রি.) আমলের বেশ মিল পাওয়া যায়।

চোরাগাছা গ্রামের ৯৪ বছর বয়সী সমসের আলী বলেন, ‘আমি আমার বাপ-দাদাদের নিকট এই মসজিদের ইতিহাস শুনে আসছি।

সুজা মসজিদের বয়স প্রায় ৪০০ বছরেরও বেশী হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘এটি সুলতানি আমলের মসজিদ। দাদাদের মুখ থেকে শুনছি মসজিদটি আল্লাহর তরফ হতে রাতারাতি নির্মাণ হযেছে।’

সুজা মসজিদের ইমাম মিজানুর রহমান বলেন, ‘এই মসজিদে আমি দীর্ঘদিন যাবত ইমামতি করছি। দূর-দূরান্ত থেকে বহু মানুষ ছুটে আসে নামাজ পড়তে ও মসজিদটি দেখতে।’

মসজিদ দেখতে আসা জামাত আলী বলেন, ‘আমার বাড়ী অনেক দূরে। আমার ছেলে অসুস্থ। তার জন্য মান্নত করছি এই মসজিদে।’ জামাত আলীর মতো অনেকের বিশ্বাস এই মসজিদে নামাজ পড়ে আল্লাহর নিকট কিছু চাইলে আল্লাহ তা পূরণ করেন।