
খেজুরের গুড়ের জন্য শীত পড়তে না পড়তেই বাঙালি উৎসুক হয়ে থাকে । আর পায়েসে যদি খেজুরের গুড় দেওয়া হয় তা হলে তো তার স্বাদই বদলে যায়। শীতকালে গুড়ের স্বাদ বাঙালির কাছে মধুর সমান। শীতের মিষ্টি মানেই খেজুরের গুড়!
কিন্তু জানেন কি, কেবল রান্নায় স্বাদ বাড়াতেই নয়, নানা অসুখের প্রতিরোধক হিসেবেও ব্যবহৃত হয় খেজুরের গুড়। এমনকি, আয়ুর্বেদশাস্ত্রেও এই গুড়ের ব্যবহার পরিলক্ষিত।



বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘খেজুরের গুড়ের আয়রন শরীরের নানা কাজে লাগে। চিনি বা কৃত্রিম চিনির চেয়ে এটি অনেক উপকারী। চিনি নিয়ে চিকিৎসকদের নানা দ্বিমত থাকলেও খেজুরের গুড় নিয়ে কোনো মতভেদ নেই।’
১- চিনির বিকল্প গুড়। চিনির কার্বোহাইড্রেট শরীরে জমে। কিন্তু গুড়ের কার্বোহাইড্রেটের ক্ষেত্রে সে সমস্যা নেই। তা র’ক্তে’র সঙ্গে দ্রুত মিশে যেতে পারে আবার র’ক্তে বেশিক্ষণ থাকতেও সক্ষম।



২- এই গুড় হজমে সাহায্যকারী উৎসেচকের শক্তি বাড়ায়। ফলে খাবার দ্রুত হজম হয়, বদহজমজনিত সমস্যাও থাকে না।
৩- পিরিয়ডের সমস্যা মেটাতে এই গুড় কার্যকর। পিরিয়ডের আগে বা সময় এই গুড় খেলে নানা শারীরিক সমস্যার সমাধান হয়।
৪- হরমোনের সমতা রক্ষা ছাড়াও এনডোরফিন্স বা ‘হ্যাপি হরমোন’-এর ক্ষরণ বাড়িয়ে এই সমস্যাগুলো দূরে রাখে খেজুরের গুড়।



৫- গুড় শীতকালে শরীরকে গরম রাখে। ফলে ঠাণ্ডা আবহাওয়ার সঙ্গে লড়তে সুবিধা হয়।
পেটের অতিরিক্ত চর্বি কমিয়ে শক্তি বাড়ায় যে আলু
আপনার পেটে অতিরিক্ত চর্বি নিয়ে চিন্তা। অনেক কিছু করেও কমাতে পারছেন না পেটের চর্বি।
পেটের চর্বি অতিরিক্ত মানেই কিন্তু ওজন বেড়ে যাওয়া। ডায়াবেটিস বা অন্য কোনো কারণে আলু খাওয়া বাদ দিলেও খেতে পারেন লাল মিষ্টি আলু। এই আলু শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাবে।



পুষ্টিবিদদের মতে, আলুকে বাদ দিলেও লাল মিষ্টি আলুকে অবহেলা করবেন না। ‘আমেরিকান ওবেসিটি অ্যাসোসিয়েশন’ এর মতে, লাল আলুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই) এতটাই কম যে এর থেকে তৈরি হওয়া গ্লুকোজ দ্রুত রক্তে মিশে যেতে পারে। এ ছাড়াও লাল আলুর বেশ কিছু গুণের কথাও জানিয়েছে তারা।
পুষ্টিবিদ সুমেধা সিংহের মতে, আলুও যে খুব ক্ষতিকারক তা কিন্তু নয়। আলু সেদ্ধ হওয়ার পর পানি ফেলে দিলে সেই আলুতে খুব একটা ক্ষতি হয় না। তবু বেশি মাত্রায় ডায়াবেটিক ও ওবেসিটির রোগীদের আলু থেকে বারণ করা হয়।



তিনি বলেন, আলু থেকে তৈরি গ্লুকোজ দ্রুত রক্তে মেশে না। কিন্তু লাল আলুর বৈশিষ্ট্য একেবারেই বিপরীত। তাই ডায়েটে লাল আলু রাখতে পারেন।এই আলু ওজন কমাতে সাহায্য করে।
কী কারণে পাতে লাল আলু রাখবেন তার বেশকিছু কারণ জানিয়েছে ‘আমেরিকান ওবেসিটি অ্যাসোসিয়েশন’। এতে ভিটামিন এ, প্রয়োজনীয় খনিজ ও ফাইটোনিউট্রিয়েন্টের মতো দরকারি উপাদান রয়েছে। মূলত শীতে পাওয়া যায় এই সবজি।
ফাইবার- লাল আলুতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। যা পাকস্থলীতে জেল জাতীয় আঁঠালো পদার্থ তৈরি করে। এতে পেট ভরে তাড়াতাড়ি ও ক্ষুধা কম লাগে। ফলে ওজন কমে। লাল আলু মেটাবলিজম বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম, সহজপাচ্য হওয়ায় হজমের সমস্যাতেও পড়তে হয় না।



উপকারী কার্বস- শক্তি বাড়াতে এই সবজি কাজে আসে। শরীর গঠনের প্রয়োজনীয় কার্বোহাইড্রেটের অন্যতম উৎস এই লাল আলু।
প্রতি ৩০০ গ্রাম রাঙা আলু সেদ্ধ থেকে ৫৮ গ্রাম মতো কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায়। নো কার্বস ডায়েটে অভ্যস্তরাও একে সহজেই পাতে নিতে পারেন। কারণ, এর কার্বোহাইড্রেট দ্রুত রক্তে মিশে শক্তি উৎপন্ন করতে পারে।
পানি শোষণকারী- মেটাবলিজম বাড়ানোর পাশাপাশি শরীরের পানি শোষণ করে নিতে এই সবজি খুবি ভালো কাজ করে। পানির সঙ্গেই শরীরের টক্সিনকে দূর করতেও বিশেষ কার্যকরী।
তাই জমে থাকা পানির প্রভাবে শরীর ফুলে গেলে তার হাত থেকে অনেকটাই নিষ্কৃতি দেয় এই সবজি। শরীরের পিএইচ ফ্যাক্টরে ভারসাম্য রাখতেও সাহায্য করে।
অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট- লাল আলুতে জিঙ্ক সুপারঅক্সাইড, স্পোরামিন, ক্যাটালেস ধরনের অ্যান্টিঅক্সাইডের পরিমাণ বেশি থাকে বলে এগুলো শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।