কখন করোনা রোগীকে হাসপাতালে জরুরি ভিত্তিতে ভর্তি করতে হবে?

937

করোনা রোগে এখন পর্যন্ত কোনো কিউরেটিভ চিকিৎসা নেই। রোগীকে ওষুধ দিয়ে সুস্থ করার কিছুই নেই। তাকে হাসপাতালে নেবার পর দেয়া হয় সাপোর্টিভ চিকিৎসা। যেটা শুরুতে এবং বেশির ভাগ সময়ই ঘরেই দেয়া সম্ভব।

হাসপাতাল মূলত তার অন্য অসুখগুলো (কো-মরবিডিটি) ম্যানেজ করে। তার শরীরের জন্য যখন যেটা দরকার, সেটাই তার জন্য করে। যথাযোগ্য পুষ্টি ও বিশ্রামের ব্যবস্থা করে, যাতে শরীরের ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী হয় ও নিজেই যু’দ্ধ করতে পারে করোনার বিরুদ্ধে।

করোনা’ভাই’রাস মহা’মারীতে চিকিৎসকরা বলছেন এ ভাই’রাসে আ’ক্রা’ন্ত বেশিরভাগ রোগীকেই বাসায় রেখেই সুস্থ করা সম্ভব। কিন্তু অবস্থা গুরুতর হলে তখন আর বাসায় সুস্থ হওয়া সম্ভব নয়।

আসুন জেনে নিই কখন করোনায় আ’ক্রা’ন্ত রোগীকে হাসপাতালের জরুরি ভিত্তিতে ভর্তি করতে হবে-

১. শ্বাসকষ্ট শুরু হলে,

২. ঠোঁট, জিহ্বা, মুখ ইত্যাদি নীলচে রঙ ধারণ করলে,

৩. পালস অক্সিমিটারে অক্সিজেন স্যাচুরেশান ৯৩% এর নিচে নেমে গেলে,

৪. জ্বর এবং কাশির অবনতি হতে থাকলে,

৫. অতিরিক্ত দুর্বলতা দেখা দিলে,

৬. অসময়ে অতিরিক্ত ঝিমুতে থাকা/ কোনোভাবে জাগিয়ে রাখা যাচ্ছে না/কিছু মনে রাখতে না পারছে না/ সময়-স্থান-মানুষ চিনতে পারছে না/অজ্ঞান হয়ে গেলে,

৭. বুকে চলমান ব্যথা/চাপ অনুভূত হতে থাকলে।

এমন সমস্যা দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে করণীয়-

* ১-৩ নাম্বার সমস্যাগুলো দেখা দিলে রোগীকে উপুড় করে শুইয়ে দিন। বাসায় অক্সিজেন সিলিন্ডার থাকলে অক্সিজেন দিন।

* আত’ঙ্কিত না হয়ে দ্রুত যানবাহন অথবা অ্যাম্বুল্যান্স কল করুন।

লেখক: ডা. মারুফ রায়হান খান।

ঢাকার একটি কভিড স্পেশালাইজড হাসপাতালে কর্মরত।

দাঁড়িয়ে খাবার খেলে যা হয়

আমরা প্রায়ই দাঁড়িয়ে খাবার খাই। এটা আমাদের প্রতিদিনকার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। কখনও কি মনে হয়েছে, দাঁড়িয়ে খাবার খেলে কি হয়? এটাই যদি প্রতিদিনের অভ্যাস হয়ে থাকে শীঘ্রই পাল্টানোই শ্রেয়। এ অভ্যাসে সর্বনাশ হতে পারে। এভাবে রোজ খেলে একটু একটু করে অবসাদে ডুবতে থাকবেন বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। খাবারের স্বাদও পাওয়া যায় না। এমনটি জানাচ্ছে জার্নাল অব কনজিউমার রিসার্চ। খবর এনডিটিভি’র।

শুধু তাই নয়। কোন ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে খাচ্ছেন সেটাও নাকি স্বাদগ্রহণের পক্ষে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। গবেষকদের মতে, দাঁড়ানোর বদলে যদি বসে শান্তিতে খান তাহলে স্বাদ আরও বেশি করে পাবেন। কারণ- ভঙ্গি, শরীরের ভারসাম্যের সঙ্গে স্বাদ গ্রহণের বিষয়টি অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। তাই দাঁড়ানোর থেকে বসে খেলে সবাই খাবারে বেশি স্বাদ পান।

সাউথ ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দীপায়ন বিশ্বাস বলেন, ‘অনেক সময়েই দেখা যায়, যেসব বাচ্চারা খেতে ভালোবাসে না বা খাবার দেখলেই উল্টোদিকে পালায় তাদের ভুলিয়ে খাওয়াতে গিয়ে মা-বাবা জানালা বা কোথাও দাঁড় করিয়ে ঝপাঝপ করে খাওয়াতে থাকেন। দাঁড়ানোর পদ্ধতি যদি সঠিক হয় তাহলে বাচ্চারা অনেক সময়েই চুপচাপ খেয়ে নেয়। কিন্তু তা না হলে ওদের বিরক্তি আরও বাড়ে। কিছুতেই খেতে চায় না।’

কেন এমনটা হয় জানেন? বিশেষজ্ঞদের মতে, দাঁড়িয়ে থাকার ফলে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি আমাদের নীচের দিকে আকর্ষণ করে। এতে শরীরের র’ক্ত নীচের দিকে প্রবাহিত হয়। সারা শরীরে ছড়িয়ে দিতে কষ্ট হয় হৃদপিণ্ডের। ফলে বেড়ে যায় হৃদস্পন্দন। আর তাতেই বাড়তে থাকে হাইপো থ্যালামিক পিটুইটারি অ্যাড্রিনালিন। হরমোনে অতি মাত্রায় চাপ পড়ে।

আর শরীর অবসন্ন হলে কী করে খাবারের স্বাদ নেবেন! এমনকি সামান্য শারীরিক সমস্যাতেই স্বাদু খাবারও বিস্বাদ হয়ে যায়। বিষয়টির সত্যতা যাচাই করতে গবেষকরা ৩৫ জনকে পিটা চিপস খেতে দিয়েছিলেন। এঁদের মধ্যে কিছু জন খেয়েছে দাঁড়িয়ে। বাকিরা খেয়েছেন বসে।

যাঁরা দাঁড়িয়ে খেয়েছেন তাঁরা পিটা চিপসের কোনও স্বাদই পাননি! যাঁরা আরাম করে বসে খেয়েছেন তাঁদের কাছে অমৃততুল্য চিপসের স্বাদ। এরপরেই গবেষকরা খেতে দেন ফ্রুট স্ন্যাকস। আগের মতোই অর্ধেকে খান দাঁড়িয়ে। বাকিরা বসে। এবার নাকি খাবারের স্বাদ সব থেকে বিস্বাদ লেগেছে।