
পবিত্র কোরআনে কন্যাসন্তানের সংবাদকে ‘সুসংবাদ’ বলা হয়েছে। তাছাড়া কন্যাসন্তান আল্লাহর শ্রেষ্ঠ উপহার। মা-বাবার জন্য জান্নাতের দাওয়াত নামা নিয়ে দুনিয়ায় আসে এই কন্যাসন্তানরা। জাহেলি যুগের সেই বর্বর চিন্তার মানুষের সমালোচনা করা হয়েছে, যারা কন্যাসন্তানের খবর সুসংবাদ হিসেবে পেলে মন খারাপ করত।



এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘তাদের কাউকে যখন কন্যাসন্তানের সুসংবাদ দেওয়া হয়, তখন তার মুখমণ্ডল কালো হয়ে যায় এবং সে অসহনীয় মনোস্তাপে ক্লিষ্ট হয়। তাকে যে সুসংবাদ দেওয়া হয়, তার গ্লানি হেতু সে নিজ সম্প্রদায় হতে আত্মগোপন করে; সে চিন্তা করে যে হীনতা সত্ত্বেও সে তাকে রেখে দেবে, না মাটিতে পুঁতে দেবে। লক্ষ করো, সে কত নিকৃষ্ট সিদ্ধান্ত স্থির করেছিল।’(সুরা: নাহল, আয়াত: ৫৮-৫৯)
রাসুলুল্লাহ (সা.) কন্যাসন্তান লালন-পালনকারীর জন্য তিনটি পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন—এক. জাহান্নাম থেকে মুক্তি, দুই. জান্নাতে প্রবেশের নিশ্চয়তা এবং তিন. জান্নাতে রাসুল (সা.)-এর সঙ্গী হওয়ার সৌভাগ্য।



তাই মহান আল্লাহ কাউকে কন্যাসন্তান উপহার দিলে সন্তুষ্ট চিত্তে তাদের লালন-পালন করা আবশ্যক। কেননা তারা জাহান্নাম থেকে মুক্তির উপায়। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তিকে কন্যাসন্তান লালন-পালনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং সে ধৈর্যের সঙ্গে তা সম্পাদন করেছে, সেই কন্যাসন্তান তার জন্য জাহান্নাম থেকে আড় (প্রতিবন্ধক) হবে। (তিরমিজি, হাদিস: ১৯১৩)
অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) কন্যাসন্তানের লালন-পালনের বিষয়ে বলেছেন, যে ব্যক্তির তিনটি কন্যাসন্তান বা তিনজন বোন আছে, আর সে তাদের সঙ্গে উত্তম আচরণ করেছে, তাদের নিজের জন্য অসম্মানের কারণ মনে করেনি, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে। (তিরমিজি, হাদিস: ১৯১২)



উপরোক্ত হাদিস থেকে বোঝা যায়, জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও জান্নাতে প্রবেশের ব্যাপারে কন্যাসন্তানের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। উপহারের ধারাবাহিকতা এখানেই শেষ নয়। উত্তমরূপে কন্যাসন্তান লালন-পালনের মাধ্যমে জান্নাতে প্রিয় নবী (সা.)-এর সান্নিধ্য পাওয়া যায়।
হজরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি দুজন কন্যাসন্তানকে লালন-পালন ও দেখাশোনা করল (বিয়ের সময় হলে ভালো পাত্রের কাছে বিয়ে দিল) সে এবং আমি জান্নাতে এরূপ একসঙ্গে প্রবেশ করব, যেরূপ এই দুটি আঙুল (এ কথা বলার সময় তিনি নিজের দুই আঙুল মিলিয়ে দেখালেন)। (তিরমিজি, হাদিস : ১৯১৪)



ইউরোপে মাটির নিচে ১২০০ বছরের প্রাচীন মসজিদের সন্ধান লাভ!
ইউরোপের দেশ স্পেন। এক সময় মুসলিম অধ্যুসিত দেশটির বর্তমান রাজধানী মাদ্রিদের রেকোপোলিস গ্রামে ১২০০ বছরের পুরনো মসজিদের সন্ধান পাওয়া গেছে।
মাদ্রিদের প্রত্নতত্ত্ববিদদের মতে, মাটির নিচ থেকে যে স্থাপনা বেরিয়ে এসেছে তা দেখতো পুরোপুরি মসজিদের মতোই। আর এ মসজিদটিই ইউরোপের সবচেয়ে প্রাচীন মসজিদ হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।



রেকোপোলিস শহরে ৬০০ শতকের দিকে নির্মিত প্রাচীন এ মসজিদটি মাটির নিচে চাপা পড়েছিল বলে জানায় প্রত্নতত্ত্ববিদরা। রেকোপোলিস শহরটি ভিসগথিক শাসকরা নির্মাণ করেন।
শহরটিতে মুসলিম শাসনামলের বিভিন্ন নিদর্শন রয়েছে। ৮০০ শতকের দিকে রেকোপোলিস শহরটি পরিত্যক্ত হয়।
প্রত্নতত্ত্ববিদরা খননকাজ ছাড়াই জিওম্যাগনেটিক পদ্ধতিতে তাদের অনুসন্ধান কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা এ স্থানের মাত্র আট শতাংশ তথ্য উপাত্ত উদঘাটন করতে পেরেছেন।



হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাইকেল ম্যাকক্রোমিক জানান, ‘যত জায়গায় আমরা জরিপ করেছি, প্রায় সব জায়গার ভবন, সড়ক ও গলি অনুসন্ধান করেছি।
২০১৪ সালে এই স্থান ভ্রমণ করতে এসে তিনি তার বন্ধু স্পেনের আলচালা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যঅপক ল্যারো ওলমোকে রসিকতা করে বলেন, এখানে একটি প্রাসাদ, একটি চ্যাপেল ও কিছু দোকানপাটের অবশিষ্টাংশ দেখা যায় কিন্তু বাকি শহরটি গেলো কোথায়?
পরবর্তী বছর ২০১৫ সালে তিনি পুরো শহরটির জরিপের কাজ শুরু করেন। কয়েকজন সহকর্মীসহ জিওম্যাগনেটিক পদ্ধতিতে তিনি স্থানটির সম্পূর্ণ জরিপ করেন।



জরিপ চলাকালীন সময় প্রত্নতত্ত্ববিদরা লক্ষ্য করেন, ‘অন্যান্য স্থাপনার চেয়ে একটি স্থাপনা ভিন্ন। যেটি পবিত্র নগরী মক্কা অভিমুখী। এছাড়াও স্থাপনাটির নকশাও প্রায় মধ্যপ্রাচ্যের মসজিদের আদলে নির্মিত।
তবে প্রত্নতত্ত্ববিদরা জানান, ‘মাটি না খুঁড়ে পুরোপুরি নিশ্চত হওয়া যাচ্ছে না যে, এটি মসজিদ নাকি অন্য কিছু। তবে নির্মাণ শৈলী দেখে অনুমান করা যাচ্ছে যে, মসজিদের আদলে কেবলামুখী এ স্থাপনাটি মসজিদই হতে পারে।
যদি এটি নিশ্চিত মসজিদই হয় তবে তা হবে ইউরোপের সবচেয়ে প্রাচীন মসজিদ। যা হিসেবে প্রায় ১২০০ বছরেরও বেশি পুরনো হবে। এমনটিই দাবি করছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা।