করোনা আ’ক্রা’ন্ত সেই ইমাম সাহেব সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন !

1158

ইমাম সাহেব করোনা মুক্ত – সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের ইসলামপাড়া গ্রামের প্রথম করোনা আ’ক্রা’ন্ত রোগী মুফতি শামীম মিয়া । ১০ দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিয়ে তিনি এখন সুস্থ।

শুক্রবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক টিম তাকে করোনা’ভা’ইরাস মুক্ত ঘোষণা দিয়ে বাড়িতে যাওয়ার ছাড়পত্র দেন।

মুফতি শামীম মিয়া নারায়ণগঞ্জের একটি গার্মেন্টসে চাকরি করার পাশাপাশে ওই গার্মেন্টসের মসজিদে ইমামতি করতেন। গত ৫ এপ্রিল করোনা উপসর্গ দেখা দিলে শামীম নিজেই ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নমুনা দিয়ে আসেন।

পরে ৬ এপ্রিল সন্ধ্যার দিকে তার রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর ওইদিন রাতেই পলাশ উপজেলা প্রশাসন ডাঙ্গা ইউনিয়নের ইসলামপাড়া এলাকার সব দোকান বন্ধ করে ইসলামপাড়া এলাকা লকডাউন করে দেয়।

পরদিন দুপুরে করোনা আ’ক্রা’ন্ত শামীম মিয়াকে পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশনে রেখে তার চিকিৎসা করানো হয়। তাছাড়া শামীম মিয়ার পরিবারের ৯ সদস্যকেও উপজেলা কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রেখে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে আইইসিডিআরে পাঠানো হলে তাদের রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. নাজমুল হক জানান, পলাশে করোনাভাইরাসে আ’ক্রা’ন্ত প্রথম রোগী শামীম মিয়াকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেয়ার পাশাপাশি পরপর দুইবার নমুনা সংগ্রহ করে

আইইসিডিআরে পাঠানো হলে তার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। তাই, শামীমকে করোনা মুক্ত ঘোষণা করে বাড়ি যাওয়ার ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।

এছাড়া জিনারদী ইউনিয়নের গাবতলি গ্রামে করোনা আক্রান্ত দুই ব্যক্তির শারীরিক অবস্থাও ভালো। ওই দুইজনকে বাড়িতে রেখেই আইসোলেশনের ব্যবস্থা করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অ.দা.) ফারহানা আলী জানান, করোনাকে পরাজিত করে সুস্থ হয়ে যাওয়া শামীম মিয়ার বাড়ির লকডাউন (তালা) খুলে দেয়া হবে। তবে অহেতুক যাতে কেউ বাইরে না বের হয়, সেই বিষয়ে কড়া নজরদারীতে রাখা হয়েছে।

দেশে ফিরলেন ভারতে আটকে পড়া ৭৯ জন

ভারত থেকে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে শুক্রবার দেশে ফিরেছেন ৭৯ জন নারী, পুরুষ ও শিশু। ম’হা’মা’রি করোনা ভা’ইরাস ছড়িয়ে পড়ায় বিদেশফেরতদের সংশ্লিষ্ট ইমিগ্রেশনের নিকট যেকোনো প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় এসব পাসপোর্টযাত্রীদের ইমিগ্রেশন ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিকতা শেষে নিকটস্থ প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত এ পথে ভারতে গিয়ে আটকে পড়া ৭৯ জন বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফেরেন।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি আহসান কবির বলেন, ফেরত আসাদের বিশেষ নিরাপত্তায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হচ্ছে। ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে এদের পুলিশ, বিজিবি, উপজেলা প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নির্দিষ্ট গন্তব্য নিয়ে যাচ্ছে।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার শুভঙ্কর কুমার মন্ডল জানান, ভারতফেরতদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষায় কারো শরীরে করোনার কোনো সং’ক্র’ম’ণ নেই। সবার শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক আছে।

ভারত ফেরতদের দায়িত্বে থাকা শার্শা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হাফিজুর রহমান বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভারতফেরত পাসপোর্ট যাত্রীদের ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে।

আজ যে ৭৯ জন যাত্রী এসেছেন এদের আমরা যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের গাজিরদরগাহ নামক একটি মাদরাসায় নিয়ে যাব। সেখানে তারা ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর যদি কারো শরীরে করোনা সং’ক্রা’ম’ক ধরা না পড়ে সরাসরি বাড়ি চলে যাবেন।

উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত ভারত ফেরতদের ১৪ দিনের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৫৬৬ জনকে বেনাপোল পৌর বিয়েবাড়ি ও যশোরে গাজীর দরগাহে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।