করোনা থেকে রক্ষা পেতে যে দোয়া পড়তে বলেছেন মিজানুর রহমান আজহারী

1275

এই দোয়াটি বেশি বেশি পাঠ করুন – বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে যখন নানা পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে সেই মুহূর্তে এই রোগে আ’ক্রা’ন্ত হওয়ার শ’ঙ্কা কমাতে এক দোয়া পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন ইসলামিক বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী।

গত মঙ্গলবার, দুপুরে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে এ পরামর্শ দেন তিনি। স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, ‘প্রা’ণ’ঘা’তী করোনা ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা পেতে, প্রয়োজনীয় সতর্কতার পাশাপাশি এই দোয়াটি বেশি বেশি পাঠ করুন। মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা আমাদের সবাইকে এই ভয়াবহ ভা’ই’রা’স থেকে হেফাজত করুক।

اللَّهمَّ إِنِّي أَعُوُذُ بِكَ مِنَ الْبرَصِ، وَالجُنُونِ، والجُذَامِ، وسّيءِ الأَسْقامِ.

বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আ’য়ুজুবিকা মিনাল বারাছ, ওয়াল জুনুন ওয়াল জুযাম, ওয়া সায়্যিইল আসক্বাম।

বাংলা অর্থ: হে আল্লাহ, আমি তোমার নিকট ধবল, কুষ্ঠ এবং উন্মাদনা সহ সব ধরনের কঠিন দূরারোগ্য ব্যাধি থেকে পানাহ চাই।

[সুনান আবু দাউদ]’

গুনাহগারদের কান্নাকাটি মহান আল্লাহ্‌র কাছে প্রিয় !

হাদিসে কুদসিতে এরশাদ হয়েছে, মহান আল্লাহ্‌পাক বলেন, গুনাহগারদের কান্নাকাটির আওয়াজ, তসবি জপকারীদের আওয়াজ অপেক্ষা আমার কাছে অধিক প্রিয় (তাফসির রুহুল মাআনী খণ্ড ৩০, পৃষ্ঠা ৫৩৩)।

অন্যত্র আল্লাহপাক বলেন, ‘আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তওবাকারীকে ভালোবাসেন এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরও ভালোবাসেন’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২২২)।

অপর আয়াতে আল্লাহপাক বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে তওবা কর বিশুদ্ধ তওবাই নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের সৎকর্মগুলো মোচন করে দেবেন এবং তোমাদের দাখিল করবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত’ (সুরা তাহরিম : আয়াত ৮)।

অপর আয়াতে আল্লাহপাক বলেন ‘হে মুমিনগণ তোমরা সবাই আল্লাহপাকের কাছে তওবা কর নিশ্চয় তোমরা সফলকাম হবে।’ (সূরা নূর : আয়াত ৩১)।

উল্লিখিত আয়াতসমূহ ছাড়াও এমন অসংখ্য আয়াত রয়েছে যে সব আয়াতের সারমর্ম হলো গুনাহগার ব্যক্তি আল্লাহপাকের কাছে যখন নিজের গুনাহের জন্য ক্ষমা চায় আল্লাহপাক তাকে ক্ষমা করে দেন এবং নিজের প্রিয় বান্দা হিসেবে কবুল করে নেন।

তা ছাড়া হাদিস শরিফে রসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাপী ব্যক্তির পাপ মোচনের সুসংবাদ দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে : হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত যে মহানবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন গুনাহ থেকে যে ব্যক্তি তওবা করে সে এমন নিষ্পাপ হয়ে যায় যেন তার কোনো গুনাহই ছিল না (ইবনে মাজাহ্ হাদিস ৪২৫০ বায়হাকী, হাদিস ৭১৭৮ মুনযিরী, হাদিস-৪৫০৪)।

অপর হাদিসে ইরশাদ হয়েছে : হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আদম সন্তানের সবাই (কম বেশি) গুনাহগার।

আর এ গুনাহগারদের মধ্যে তারাই শ্রেষ্ঠ যারা বেশি বেশি তওবা করে (তিরমিযী হাদিস ২৫০১, ইবনে মাজাহ হাদিস ৪২৫১, ইমাম হাকেম খ- ৪ পৃ. ২৪৪ মুনযিরী হাদিস-৪৫৯৬)। আল্লাহতায়ালা প্রত্যেক এমন পাপীর জন্যও তওবার দুয়ার খোলা রেখেছেন যে ব্যক্তি বারবার পাপ করছে।

সুতরাং এমন ব্যক্তির জন্য এ পাপ পরিত্যাগপূর্বক কলুষমুক্ত জীবনে পরিবর্তিত করতে কোনো বাধা নেই, কেননা হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, পাপী ব্যক্তির পাপ যদি এতে অধিকও হয় যে, তা আকাশ ছুঁয়ে যায় তবুও সে যখন আল্লাহপাকের কাছে তওবা করে আল্লাহপাক তাকে ক্ষমা করে দেন। (ইবনে মাজাহ)।

অপর হাদিসে ইরশাদ হয়েছে : হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি শুনেছি সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, আল্লাহপাক বলেছেন, হে আদম সন্তান যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি আমার কাছে দোয়া করতে থাকবে এবং আমার কাছে আশা করতে থাকবে, তোমার যত গুনাহই হোক না কেন আমি তা মাফ করে দেব। আমি কারও পরোয়া করি না।

হে আদম সন্তান! তোমার গুনাহ যদি আকাশের মেঘমালা পর্যন্ত পৌঁছে যায়, অতঃপর তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাও আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব (তিরমিযী পৃষ্ঠা-১৯৪, খণ্ড-২)।