গার্মেন্টের ভিতরে মিললো ৬ মেট্রিক টন পেঁয়াজ !

5562

দেশে চলমান এই করোনা দুর্যোগের মধ্যে ও রমজান মাসকে সামনে রেখে অসাধু ব্যবসায়ীরা নানা কৌশল নিচ্ছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মুন্সীগঞ্জে একটি পোশাক কারখানায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে সাড়ে ছয় মেট্রিক টন পেঁয়াজ পাওয়া গেছে।

আজ (১৬ এপ্রিল) বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টার দিকে জেলার সিরাজদিখান টেঙ্গুরিয়াপাড়া এলাকায় এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশফিকুন নাহার।

এ সময় কারখানার মালিক রুহুল আমিনকে (৪৫) ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সে টেঙ্গুরিয়া পাড়া গ্রামের আব্দুল খালেক বেপারীর ছেলে। পেঁয়াজগুলো জব্দ করে কারখানায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে প্রশাসন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশফিকুন নাহার জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা কালে গার্মেন্টের ভিতরে সাড়ে ৬ মেট্রিক টন পেঁয়াজ মজুদ অবস্থায় পাওয়া যায়।

গার্মেন্ট মালিক রুহুল আমিনকে কৃষি বিপনন আইনের ২০১৮ এর ১৯/ক-১০ ধারায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও মালামাল ক্রোক করা হয়েছে। পেঁয়াজগুলো নিলামে বিক্রি করা হবে। সে পর্যন্ত এগুলো সিরাজদিখান থানার ত্বত্তাবধানে থাকবে।

”চাচা আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন আপনি?,” মাশরাফি

‘চাচা আসসালামু আলাইকুম, আমি মাশরাফি। কেমন আছেন আপনি? আপনার বাসার সবাই ভালো? ঘরে খাবার-দাবার আছে চাচা? এই নেন (এক প্যাকেট খাবার আর কিছু টাকা)। আসি চাচা, আমার জন্য দোয়া করবেন। ক’রো’না সংক্রমণ থেকে সাবধানে থাকবেন।’

হঠাৎ মোটরসাইকেলে ছুটে চলেছেন নড়াইলের কোনো এক গ্রামে। শহর থেকে বেরিয়ে মুলিয়া এলাকায় গিয়ে হঠাৎ মোটরসাইকেল থামালেন। একজন কৃষক জমিতে কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। তার সামনে মোটরসাইকেল থামিয়ে এসব কথা বললেন মাশরাফি।

কৃষকের হাতে এক প্যাকেট খাবার দিয়ে আবার মোটরসাইকেলে চলতে শুরু করলেন। এ যেন এক অন্যরকম এমপি। তিনি নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।

মোটরসাইকেলে এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে ছুটে চলছেন। করোনা পরিস্থিতিতে নিচ্ছেন মানুষের খোঁজখবর তিনি। হাতে হাতে তুলে দিচ্ছেন ব্যক্তিগত ত্রাণসামগ্রী। সংসদ সদস্য হলেও আশপাশে নেই পুলিশ। নেই কোনো গাড়িবহর কিংবা হুইসেল।

অন্য এমপিদের মতো কোটি কোটি টাকার দামি গাড়িতে চড়েন না এই এমপি। গাড়ির গ্লাস খুলে জনতাকে ডাকেন না। পুলিশ কিংবা নিরাপত্তারক্ষী নেই তার। নিরাপত্তারক্ষী থাকলে হয়তো গাড়ি থামিয়ে গ্লাস খুলে জনতাকে ডাকতেন, ‘ওই চাচা, আপনাকে এমপি মহোদয় ডাকেন।’

কিন্তু মোটরসাইকেল থামিয়ে হাতে খাবারের প্যাকেট দিয়ে চলে যাওয়া এমপির দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে রইলেন ওই কৃষক। বাড়িতে গিয়ে হয়তো ওই কৃষক এতক্ষণে স্ত্রী-সন্তানদের উৎফুল্ল মনে বলছেন; জানিস আজ কার সাথে দেখা হয়েছিল? এই খাবারের প্যাকেট কে দিয়েছে?

পরিবারের সদস্যদের জানার আগ্রহ বেড়ে যায়। বার বার জানতে চায় কে সেই লোক? সবশেষে নিজের আদরের সন্তানকে বুকে জড়িয়ে ওই কৃষক বাবা বললেন, আমাগো এমপি মাশরাফি দিয়েছে বাবা। বাড়ি আসার পথে হঠাৎ মোটরসাইকেল থামিয়ে আমাকে সালাম দিল। তোদের সবার কথা জানতে চেয়েছে। এই খাবার ও টাকা দিয়ে গেছেন। ক’রো’না প্রতিরোধে সবাইকে সাবধানে থাকতে বলেছে মাশরাফি।

শুনে পরিবারের সবার মুখে হাসি। স্ত্রীর মনে প্রশ্ন, এমপি কি এমনও হয়! এমপি এত সাধারণ? মোটরসাইকেলে চলে! এমন নানা প্রশ্নের মাঝে মনে স্বস্তি নিয়ে জনতার এমপির জন্য মনভরে দোয়া করে ওই কৃষকের পরিবার। অপেক্ষায় থাকে জনতার এমপিকে সুখে-দুঃখে পাশে পাওয়ার।

এ ঘটনার পরদিন নড়াইল থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে কালনাঘাট পর্যন্ত যত কৃষক, ভ্যানচালক পেয়েছেন মোটরসাইকেল থামিয়ে সালাম দিয়ে সবাইকে সহযোগিতা করেছেন এমপি মাশরাফি। নিম্নআয়ের এমন অসংখ্য মানুষের বাড়ির সামনে মোটরসাইকেল থামিয়ে কাউকে খাবার, কাউকে টাকা দিয়ে গেছেন তিনি। এসব পরিবারের আত্মসম্মানের কথা ভেবে ত্রাণ কিংবা সহযোগিতা দেয়ার ছবি তুলতে নিষেধ করেছেন এমপি। এ সব মানুষ কখনও মাশরাফির এসব সহযোগিতার কথা ভুলবে না। মনভরে মাশরাফির জন্য দোয়া করবে; যুগ যুগ বেঁচে থাকার।