ঘরে বসেই করোনায় আক্রান্ত কী-না যেভাবে পরীক্ষা করবেন

1779

ঘরে বসেই যেভাবে পরীক্ষা করবেন- তাইওয়ানের বিশেষজ্ঞরা একটি নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন।

সেই পদ্ধতিতে কেউ করোনা ভাইরাসে আ’ক্রা’ন্ত হয়েছেন কি না, সেটা নিজে নিজেই পরীক্ষা করতে পারবেন। পদ্ধতিটি খুবই সহজ, প্রতিদিন সকালে উঠেই কয়েক সেকেন্ডের পরীক্ষায় নিশ্চিন্ত হতে পারেন।

পরীক্ষাটা হলো: পরিচ্ছন্ন পরিবেশে লম্বা একটা শ্বাস নিয়ে সেটাকে দশ সেকেন্ডের কিছুটা বেশি সময় ধরে আটকে রাখুন। যদি এই দম ধরে রাখার সময়ে আপনার কোনো কাশি না আসে, বুকে ব্যথা বা চাপ অনুভব না হয়, মানে কোনো প্রকার অস্বস্তি না লাগে-

তার মানে আপনার ফুসফুসে কোনো ফাইব্রোসিস তৈরি হয়নি অর্থাৎ কোনো ই’ন’ফে’ক’শ’ন হয়নি, আপনি সম্পূর্ণ ঝুঁকিমুক্ত আছেন। জাপানের চিকিৎসকরা আরেকটি সহজ উপদেশ দিয়েছেন যে,

সবাই চেষ্টা করবেন যেন আপনার গলা ও মুখের ভেতরটা কখনো শুকনো না হয়ে যায়, ভেজা ভেজা থাকে। তাই প্রতি পনেরো মিনিট অন্তর একচুমুক হলেও পানি পান করুন।

তারা কারণ হিসেবে বলেছেন, কোনোভাবে ভাইরাসটি আপনার মুখ দিয়ে শরীরে প্রবেশ করলেও সেটি পানির সঙ্গে পাকস্থলীতে চলে যাবে, আর পাকস্থলীর এসিড মুহূর্তেই সেই ভাইরাসকে মে”রে ফেলতে সক্ষম।

করোনায় আ’ক্রা’ন্ত না কি সাধারণ ফ্লু, বুঝব কীভাবে?

করোনা হয়েছে নাকি সাধারণ সর্দি-কাশি, কীভাবে বুঝবেন ?-করোনা ভা’ইরা’স মূলত সাধারণ সর্দি-কাশির ভাইরাস বহনকারী গ্রুপ। এই গ্রুপের ভা’ইরা’স বছর দশেক আগেও এত ভয়াবহ ছিল না। আমরা প্রত্যেকেই এর প্রকোপে জ্বর-সর্দি-কাশিতে ভুগেছি। আবার সুস্থও হয়ে উঠেছি নিজের নিয়মে।

তবে জিনগত মিউটেশনের ফলে এর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এতই মা’রাত্ম’ক হয়ে উঠল যে ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনা ‘কভিড-১৯’ নাম নিয়ে আসা এই ভা’ইরা’স ইতিমধ্যেই আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে। বক্ষরোগ বিশেষজ্ঞ সুমিত সেনগুপ্ত ও বিশ্বনাথ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, জ্বর-সর্দি-হাঁচি-কাশি হলে এত দিন যা করছিলেন তাই করবেন।

ঘরে শুয়ে-বসে বিশ্রাম নেবেন। হালকা খাবার খাবেন। উষ্ণ পানি পান করবেন পর্যাপ্ত। দরকার মতো প্যারাসিটামল, কাশির ওষুধ খাবেন একটু আধটু। নরমাল স্যালাইন ড্রপ দেবেন নাকে। হাঁচি-কাশির সময় পরিষ্কার রুমাল ব্যবহার করবেন। শিশু, বয়ষ্ক, রুগ্ন ও গর্ভবতীদের থেকে দূরে থাকবেন।

এটুকু করলেই ধীরে ধীরে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার মাধ্যমেই ভা’ইরা’সকে কাবু করা যাবে। তখন বুঝতে হবে এটা সাধারণ ফ্লু-ই ছিল। যদি ১০ দিনেও অসুখ না কমে তবে অবশ্যই চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হতে হবে। করোনা হয়েছে কি না তা বুঝতে পরীক্ষার ব্যবস্থা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন।

মেডিক্যাল টিম ঠিক করবে অ্যান্টিবায়োটিক বা অন্য ওষুধ খেতে হবে কি না। আপনার যদি কোনও রিস্ক ফ্যাক্টর না থাকে, অর্থাৎ সম্প্রতি বিদেশ যাননি বা আশপাশে এ ধরনের রোগী নেই, তা হলে ভয় তুলনায় অনেক কম। করোনাভা’ইরা’স যদি ১০০ জনকে সংক্রামিত করে তার মধ্যে ১০-১৫ কি ২০ জনের অবস্থা জটিল হয়।

বিপদ হয় দু’-এক জনের। বাকি ৮০-৮৫ শতাংশ মানুষের সাধারণ ভা’ইরা’স সংক্র’মণের মতো উপসর্গ হয়। শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হলে তা নিজের নিয়মেই কমে যায়। তবে এরা অসুস্থ শরীরে রোগ ছড়াতে পারে। কিন্তু তাতেও উদ্বেগের কিছু নেই। করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে এমন কোনও জায়গায় যদি সফর না করে থাকেন, তা হলে নূন্যতম সচেতনতা মেনে চললেই হবে।

কিছু বিষয় মাথায় রাখুন। কারও যদি হার্ট-লাং-কিডনি-লিভারের ক্রনিক অসুখ না থাকে, বা কোনও অসুখ বা ওষুধের কারণে শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে না যায় কিংবা বয়স খুব বেশি না হয়, তা হলে অত ভয়ের নেই। সে ক্ষেত্রে রোগের উপসর্গ দেখা দেওয়ার পর ৭২ ঘণ্টা অপেক্ষা করা যেতে পারে।

তার পর যদি দেখা যায় উপসর্গ কমার বদলে বাড়ছে, প্রবল জ্বর উঠছে বা শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, রক্তচাপ কমে মাথা ঘুরছে, প্রলাপ বকতে শুরু করছেন, তা কিন্তু বিপদের লক্ষণ। করোনাভা’ইরা’সের প্রতিষেধক বা নির্দিষ্ট ওষুধ কিছু নেই। উপসর্গ হলে তবে তা কমানোর চিকিৎসা করা হয়। আর এতেই ৯৭-৯৮ শতাংশ মানুষ সেরে যান। বেশি ঝুঁকি রয়েছে এমন মানুষদের ক্ষেত্রে দ্রুত পরীক্ষা করানো প্রয়োজন।