জজ হয়ে মায়ের সেই কানের দুল ফিরিয়ে দিলেন ছেলে, কাঁদলেন মা !

7120

আজ থেকে প্রায় ১২ বছর আগের কথা। আমি তখন কলেজে পড়ি। হঠাৎ কলেজের ফরম ফিলাপে বেশ কিছু টাকা দরকার পড়ে। বাবা স্কুলের একজন সাধারণ শিক্ষক ছিলেন।

যে টাকা সম্মানি পেতেন তা দিয়ে আমার আর আমার ভাইয়ের পড়াশোনা চালানো বেশ কঠিন হয়ে পড়তো। আর যখন কোন বিশেষ পরিমাণ টাকার দরকার পড়তো তখন জমি বিক্রি ছাড়া উপায় ছিল না।

আবার জমিও যে খুব বেশি ছিল তা নয়। টাকার খুব জরুরি দরকার। খুব ক্রাইসিস চলছিল। বাবা অনেক চেষ্টা করেও জমি বিক্রি করতে পারলেন না।

কিছুটা নিরাশ লাগলো বাবাকে। তাহলে কী এবার আমার ছেলের ফরম ফিলাপ হবে না? বাবার চোখে মুখে বিষন্নতা। ফরম ফিলাপের আর মাত্র এক দিন বাকি। কি করা যায় তা ভেবে নিশ্চুপ আমার বাবা।

হঠাৎ আমার মা বাবার কাছে আসলেন আর তার কান থেকে দুটো সোনার গহনা খুলে বাবার হাতে তুলে দিলেন আর বললেন দ্রুত বিক্রি করে ফরম ফিলাপ করতে। বাবা বিক্রি করে আমাকে টাকা দিলেন আর তার পরদিনই আমি ফরম ফিলাপ করলাম।

সে দিন মা তার শখের জিনিসগুলো অবলীলায় দিয়েছিলেন আমার ভবিষ্যতের জন্য। আমি সে দিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে আমার মায়ের স্বপ্নের চাকরির প্রথম মাসের বেতন দিয়ে তার জন্য এ রকমই গহনা কিনে দেব। তাই গত ৩ জানুয়ারি (০৩.০১.২০১৯) ময়মনসিংহ থেকে প্রথম মাসের বেতন দিয়ে মাকে না জানিয়েই গহনা কিনে নিলাম।

মাকে বলিনি, কারণ বললে নিশ্চিত মানা করতেন। মা আমার হাতে তার সেই চিরচেনা সোনার ঝুমকা দোল দেখেই কেঁদে ফেললেন। চোখ দিয়ে গড়িয়ে পানি পড়ছে। মা একটু আড়াল করেই তার চোখ মুছলেন।

আমি নিজ হাতে মাকে সেই দুল পরিয়ে দেই। সে যে কি আনন্দ! এ এক পরম পাওয়া। এই অনুভূতি ভালো লাগার অনুভূতি। আমি আল্লাহর রহমতে জজ হয়েছি। আল্লাহ অনেক বড় দায়িত্ব দিয়েছেন। আল্লাহ আমার মায়ের সে স্বপ্ন পূরণ করেছেন।

লাখ লাখ শুকরিয়া তার কাছে। আমি জানি এবং বিশ্বাস করি কোন কিছুর বিনিময়ে মায়ের প্রতিদান দেয়া যায় না। শুধু নিছক কৃতজ্ঞতা জানানো ছাড়া। এই ধরণের ঘটনা প্রায় প্রতি মায়ের ক্ষেত্রেই ঘটে। তাই সব মা-দের প্রতি কৃতজ্ঞতা, শ্রদ্ধা আর সীমাহীন ভালোবাসা। মায়ের অবদান অম্লান, অতুলনীয়, প্রতিদানহীন।

মহান সৃষ্টিকর্তা সকল মা-কে সুস্থ রাখুন আর যাদের মা চলে গেছেন সেই মা-দের শান্তিতে রাখুন।

(সহকারী জজ মনিরুল ইসলামের ফেসবুক পোস্ট থেকে সংগৃহীত)

গায়ে দুর্গন্ধযুক্ত চাদর, পরনে ছেঁড়া লুঙ্গি … কাঁধের ছেঁড়া ব্যাগে মিললো চার লাখ টাকা!

গায়ে ময়লা-দুর্গন্ধযুক্ত চাদর, পরনে ছেঁড়া লুঙ্গি, মুখভর্তি সাদা দাড়ি, মাথায় উশকো-খুশকো লম্বা চুল আর কাঁধে ঝোলানো ময়লা ও ছেঁড়া কাপড়ের ব্যাগ! তিনি ঘুরে ঘুরে ভি”ক্ষা করেন। লোকে তাকে পাগল বলে। তার কাঁধের সেই ছেঁড়া-ময়লা ব্যাগে মিললো প্রায় চার লাখ টাকা!

ঘটনাটি খুলনার খালিশপুরের। পাগলের কাঁধে ঝোলানো ময়লা ও ছেঁড়া কাপড়ের ব্যাগে পাওয়া যায় ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৭৪৯ টাকা। নগরীর দৌলতপুর বাজার, বিএল কলেজ, খালিশপুর পিপলস গোল চত্ত্বর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে এই পাগলকে দেখা যায়।

বৃহস্পতিবার সকালে কৌতুহলবশত স্থানীয় কয়েকজন যুবক খালিশপুর মিল গেট এলাকায় তার ব্যাগ তল্লাশি করলে এই টাকা পাওয়া যায়। ভাঁজ ভাঁজ করে রাখা ৫শ টাকার নোটের কয়েকটি ব্যান্ডিল পাওয়া যায় তার ব্যাগের মধ্যে।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে পাগলকে ঘিরে ভিড় করে অসংখ্য মানুষ। ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে পুলিশ টাকাসহ ওই পাগলকে নিজেদের জিম্মায় নেয়।

কারো কাছে তিনি কখনো টাকা চান না। লোকজন খুশি হয়ে তাকে টাকা ও খাবার দিতো। প্রাথমিকভাবে তার নাম জেবাল হক বলে জানা গেছে।

খুলনার খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরদার মোশরফ হোসেন বলেন, টাকার মালিক জেবাল হক পাগল নয়, তবে মস্তিষ্ক বি’কৃ’ত মানুষ।

জিজ্ঞাসাবাদে নাম জেবাল হক বললেও বাড়ির ঠিকানা বলতে পারেনি। বেশি টাকা হলেই সে ১০০ ও ৫০০ টাকার নোট বানিয়ে ব্যাগের মধ্যে রাখতো।

তিনি বলেন, তার বিষয়ে সমাজ কল্যাণ অধিদফতরের সাথে কথা হয়েছে। তাদের তত্ত্বাবধায়নে সেখানে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

এরইমধ্যে ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। তবে ভা’ই’রা’ল হওয়া ছবিটি প্রসঙ্গে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।