জুমআর দিনে যে ১ টি আমলে হাজার বছরের নামাজ-রোজার সাওয়াব

1985

জুমআর দিনের আমলের অনেক ফজিলত হাদিসে বর্ণনা করা হয়েছে। কিন্তু জুমআর দিনের এমন একটি আমল রয়েছে, যা পাঁচটি শর্ত মেনে আদায় করলে হাজার হাজার বছরের নফল নামাজ ও রোজার সাওয়াব পাওয়া যায়।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমআর দিন ৫ কাজ করার মাধ্যমে ১টি আমল করবে।

অর্থাৎ জামআর নামাজ পড়তে আসবে। আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তির মসজিদে আসার প্রতি কদমে ১ বছরের নফল নামাজ ও নফল রোজার সাওয়াব দান করবেন।

কাজ ৫টি হলো-
– জুমআর দিন গোসল করা।

– আগে আগে মসজিদে আসা।

– পায়ে হেঁটে মসজিদ আসা।

– ইমামের কাছাকাছি বসা। এবং

– মনোযোগ দিয়ে খোতবা শোনা।

আমলের সাওয়াব- জুমআর দিন এ পাঁচটি কাজের আমল করলে আল্লাহ তাআলা জুমআ আদায়কারী ওই ব্যক্তির প্রতি কদমে ১ বছরের আমলের সাওয়াব দেবেন।

কী আমলের সাওয়াব দেবেন। তাও হাদিসে বলেছেন প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর তাহলো ১ বছরের নফল নামাজ ও নফল রোজার সাওয়াব।

বাড়ি থেকে মসজিদে আসতে যে কয় পদক্ষেপ বা কদম হেঁটে আসবে, ওই ব্যক্তি তত বছর নফল নামাজ ও নফল সাওয়াবের অধিকারী হবে।

ধরা যাক- কোনো ব্যক্তির বাড়ি থেকে মসজিদে আসতে ১০০ কদম হাটা লাগে। ওই ব্যক্তি যদি উল্লেখিত ৫ কাজ মেনে জুমআর দিন আমল করে তবে তার আমল নামায় ১০০ বছরের নফল নামাজ ও নফল রোজার সাওয়াব যোগ হবে।

হাদিস বিশারদদের মতে, জুমআর দিনের এ আমলের সুযোগের চেয়ে বেশি আমলের সুযোগ লাভের কোনো মাধ্যম নেই।

বিখ্যাত তাবেয়ী সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যিব বলেন, ‘আমার কাছে নফল হজ করার চেয়ে বেশি উত্তম শুক্রবারের আমল করা।’

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শুক্রবারের এ আমলটি যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ইসলাম হচ্ছে শ্রেষ্ঠ ধর্ম – জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক

ইসলাম হচ্ছে শ্রেষ্ঠ ধর্ম এবং মুসলমানরা হচ্ছে সর্ব নিকৃষ্ট অনুসারী।” ইসলামিক দেশগুলি কতখানি ইসলামিক এই নিয়ে গবেষণা করেন জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক হুসেন আসকারী।

ইসলাম ধর্মে রাষ্ট্র ও সমাজ চলার যে বিধান দেয়া হয়েছে তা যে দেশগুলি প্রতিদিনের জীবনে মেনে চলে তা খুঁজতে যেয়ে দেখা গেলো,– যারা সত্যিকার ভাবে ইসলামিক বিধানে চলে তারা কেউ বিশ্বাসী মুসলিম দেশ নয়।

স্টাডিতে দেখা গেছে সবচেয়ে ইসলামিক বিধান মেনে চলা দেশ হচ্ছে নিউজিল্যান্ড এবং দ্বিতীয় অবস্থানে লুক্সেমবার্গ।

তারপর এসেছে পর্য্যায়ক্রমে আয়ারল্যান্ড, আইসল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক ষষ্ঠ ও কানাডা সপ্তম অবস্থানে। মালয়েশিয়া ৩৮তম, কুয়েত ৪৮তম, বাহরাইন ৬৪তম, এবং অবাক করা কান্ড সৌদি আরব ১৩১তম অবস্থানে।

গ্লোবাল ইকোনমি জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় বাংলাদেশের অবস্থান সৌদীদেরও নীচে। গবেষণায় দেখা গেছে, মুসলমানরা নামাজ, রোজা, সুন্নাহ, কোরআন, হাদিস, হিজাব, দাড়ি, লেবাস নিয়ে অতি সতর্ক কিন্তু রাষ্ট্রীয়,

সামাজিক ও পেশাগত জীবনে ইসলামের আইন মেনে চলেনা। মুসলমানরা পৃথিবীর সবার চেয়ে বেশি ধর্মীয় বয়ান,ওয়াজ নসিহত শোনে কিন্তু কোন মুসলিম দেশ পৃথিবীর সেরা রাষ্ট্র হতে পারেনি।

অথচ গত ষাট বছরে মুসলমানরা অন্ততঃ ৩০০০ বার জুমার খুতবা শুনেছে। একজন চাইনিজ ব্যবসায়ী বলেছেন, মুসলমান ব্যবসায়ীরা আমাদের কাছে এসে দুই নম্বর নকল জিনিষ বানানোর অর্ডার দিয়ে বলে,

অমুক বিখ্যাত কোম্পানির লেভেল লাগাবেন। পরে যখন তাদেরকে বলি আমাদের সাথে খানা খান, তখন তাঁরা বলেন, হালাল না, তাই খবোনা। তাহলে নকল মাল বিক্রি করা কি হালাল?

একজন জাপানি নব্য মুসলিম বলেছেন, আমি পশ্চিমা দেশগুলিতে অমুসলিমদের ইসলামের বিধান পালন করতে দেখি, আর পূর্বের দেশগুলিতে ইসলাম দেখি কিন্তু কোন মুসলিম দেখিনা।

আলহামদুলিল্লাহ, আমি আগেই ইসলাম এবং মুসলমানদের পার্থক্য বুঝেই আল্লাহর ধর্ম গ্রহন করেছি। ইসলাম ধর্ম শুধু নামাজ রোজা নয়, এটি একটি জীবন বিধান এবং অন্যের সাথে মোয়ামালাত আর মোয়াশারাতের বিষয়।

একজন নামাজ রোজা পড়া আর কপালে দাগওয়ালা মানুষও আল্লাহর চোখে একজন মোনাফেক হতে পারে। নবী(স) বলেছেন, “আসল সর্বহারা আর রিক্ত মানুষ হচ্ছে তারা, যারা কেয়ামতের দিন রোজা, নামাজ, অনেক হজ্জ্ব, দান খয়রাত নিয়ে হাজির হবে কিন্তু দুর্নীতি করে সম্পদ দখল, অন্যদের হক না দেয়া, মানুষের উপর অত্যাচারের কারণে রিক্ত হস্তে জাহান্নামে যাবে।”

ইসলামের দুটি অংশ, একটি হচ্ছে বিশ্বাসের প্রকাশ্য ঘোষণা যাকে ‘ঈমান’ বলা হয়, আর একটি হচ্ছে বিশ্বাসের অন্তর্গত বিষয় যাকে ‘এহসান’ বলা হয়,– যা ন্যায়গতভাবে সঠিক সামাজিক নিয়ম কানুন মেনে চলার মাধ্যমে বাস্তবায়ন হয়। দুটোকে একত্রে প্র্যাকটিস না করলে ইসলাম অসম্পূর্ন থেকে যায় যা প্রতিটি নামের মুসলমান দেশে হচ্ছে।

ধর্মীয় বিধি নিষেধ মানা যার যার ব্যক্তিগত দায়িত্বের মধ্যে পড়ে এবং এটি আল্লাহ ও বান্দার মধ্যকার বিষয়।

কিন্তু সামাজিক বিধি নিষেধ মেনে চলা একজন বান্দার সাথে অন্য বান্দার মধ্যকার বিষয়। অন্য কথায় ইসলামিক নীতিমালা যদি মুসলমানরা নিজেদের জীবনে ব্যবহারিক প্রয়োগ না করে, মুসলিম সমাজ দুর্নীতিতে ছেয়ে যাবে এবং আমাদের ভবিষ্যৎ হবে অসম্মানজনক।

বার্নার্ড’ শ একবার বলেছিলেন, “ইসলাম হচ্ছে শ্রেষ্ঠ ধর্ম এবং মুসলমানরা হচ্ছে সর্ব নিকৃষ্ট অনুসারী।”