
বিল তোলা হয়ে গেছে- কাজের টেন্ডারই এখনো হয়নি অথচ ১ কোটি ১১ লাখ টাকার বিল তুলে নিয়ে গেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অবিশ্বাস্য মনে হলেও ভয়ংকর এই দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায়।



পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) স্বাক্ষর জাল করে আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের ১ কোটি ১১ লাখ ৭৫ হাজার ৩৩৫ টাকা তুলে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) তপন কুমার ঘোষের বিরুদ্ধে।
আশ্রয়ন প্রকল্পের ১০টি কমিউনিটি সেন্টার ও ছয়টি ঘাটলা নির্মাণের বরাদ্দ ছিল এক কোটি ১১ লাখ ৭৫ হাজার ৩৩৫ টাকা।



কিন্তু কোনো কাজ না করে পিআইও এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সারিকা ট্রেডার্সের কয়েকজন সত্ত্বাধিকারীর যোগসাজশে বিলের ওই টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। টাকা ছাড়ার আগে দায়িত্বশীলরা একবার খোঁজ নেওয়ারও চেষ্টা করেননি। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে।
বিষয়টি জানাজানি হলে নড়েচড়ে বসেছে জেলা প্রশাসন থেকে বিভাগীয় প্রশাসন। ঘটনাটি তদন্তের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।



ভূমিহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব তহবিল থেকে বিভিন্ন এলাকায় তৈরি হচ্ছে আশ্রয়ন প্রকল্প। প্রত্যেকটি প্রকল্পের আওতায় একটি করে কমিউনিটি সেন্টার ও পুকুরে পাকা ঘাট তৈরি হচ্ছে।
মেসার্স শারিকা ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান কাজ সমাপ্ত হওয়ার কাগজপত্র নকল করে সেগুলো জমা দিয়েছে উপজেলা নির্বাহীর কার্যালয়ে! সেখান থেকে উপজেলা নিরীক্ষা ও বিলপাশ শাখায় গেলে টাকা দিয়ে দেওয়া হয় ঠিকাদারকে। বিষয়টা জানাজানি হলে অবাক হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও। তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না। তার স্বাক্ষর নকল করে কাগজে বসানো হয়েছে!



এ ব্যাপারে প্রকল্প কর্মকর্তা দায় চাপাচ্ছেন তার অফিসের পিয়নের ওপর। তিনি বলেন, আমার অফিসের পিয়ন এবং ওই ঠিকাদার মিলেই এই কাজটি করেছে। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিৎ।
হিরণ পয়েন্ট এলাকায় বিদেশী জাহাজের স্টোর রুম ভেঙ্গে চুরি
মোংলা বন্দরের প্রবেশমুখে হিরণ পয়েন্ট এলাকায় একটি গ্যাসবাহী বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজের ষ্টোর রুম ভেঙ্গে শুক্রবার ভোরে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর বিদেশী ওই জাহাজের চীফ অফিসার বিষয়টি তাৎক্ষনিকভাবে জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট ‘সি এশিয়াথর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আকরাম হোসেনকে জানিয়েছেন। এরপর তিনি (আকরাম হোসেন) চুরির ঘটনাটি বন্দর কর্মকর্তা হারবার মাষ্টারকে অবহিত করেছেন।



এমভি সিনা-০৫ নামক জাহাজটি বন্দরে গ্যাস ডেলিভারী দেওয়ার জন্য হিরণ পয়েন্টে অপেক্ষা করছিল। শুক্রবার ভোরে একটি সংঘবদ্ধ চোরাকারবারী দল ওই জাহাজে উঠে ষ্টোর ভেঙ্গে ৫টি মুরিংরোপসহ অন্যান্য মূল্যবান মালামাল নিয়ে যায়। পণ্য খালাসের জন্য শুক্রবার বিকেলে মোংলা বন্দরের একটি এলপিজি কারখানায় জাহাজটি ভিড়ার কথা ছিল।
বন্দরের এই প্রবেশ মুখে প্রায়ই এ রকম চুরির ঘটনা ঘটে আসছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এর আগে গত ৭ জুন তেলবাহী জাহাজ এম,টি ট্রেসা থেকে ৭টি মুরিংরোপ একই ভাবে চুরি করে নেয় সংঘবদ্ধ চোরাকারবারী চক্রের সদস্যরা।



ওই ঘটনায় জাহাজের স্থানীয় শিপিং এজেন্ট ষ্ট্রারপাত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন মোঃ রফিকুল ইসলাম ৮ জুন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও হারবার মাষ্টারকে চিঠি দিয়ে ঘটনাটি অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানান। তবে সে ব্যাপারে কোন প্রকার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা তা জানাতে পারেননি ক্যাপ্টেন রফিক।
এম,ভি সিনা-০৫ জাহাজের চুরির ঘটনায়ও বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট এজেন্টের এমডি মোঃ আকরাম হোসেন।



তবে অভিযোগ রয়েছে, মোংলা বন্দরে আগত বিদেশী জাহাজের পণ্য ঠিক একই কায়দায় চুরি/ডাকাতি করার জন্য একটি শক্তিশালী চক্রের নিয়ন্ত্রণে পৌর শহরের রিজেকশন গলি ও শহরতলীর কাইনমারী-বাইদ্দাপাড়া এবং গোগ এলাকায় অন্তত ২০/২৫ জনের একটি গ্রুপ রয়েছে।
ওই গ্রুপকে শেল্টার দেওয়ার জন্য একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ স্থানীয় বন্দর ব্যবহারকারীদের।



এ ব্যাপারে মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, চুরির ঘটনাস্থল মোংলা থেকে ১৩০/১৪০ নটিক্যাল মাইল দূরে। এছাড়া ঘটনাস্থলও খুলনা জেলার দাকোপ থানার অধীনে।
এ বিষয়ে মোংলা বন্দর কর্মকর্তা হারবার মাষ্টার কমান্ডার এম ফখরউদ্দিন বলেন, জাহাজটির ক্যাপ্টেনের সাথে কথা বলে মুরিংরোপ চুরির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়ে তারপর দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।