
বিশেষজ্ঞরা প্রথম থেকেই বলে আসছেন যে ডায়াবেটিস রোগীদের করোনা ভা’ইরাসে আ’ক্রা’ন্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি । ডায়াবেটিস বশে না থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। ফলে যে কোনো সং’ক্র’ম’ণে’র আ’শ’ঙ্কা বেড়ে যায়।
বাড়ে করোনা ভা’ইরাসে আ’ক্রা’ন্ত হওয়ার আ’শ’ঙ্কা’ও। ডায়াবেটিক কিটো অ্যাসিডোসিস বা ‘ডিকেএ’ নামের সমস্যা হলে করোনা’ভা’ইরাসের কারণে যেসব জটিল পরিস্থিতি হচ্ছে তা সামলানো খুব কঠিন হয়ে যায়।



করোনা প্রতিরোধে ডায়াবেটিস রোগীদের যেসব বিষয় মেনে চলা জরুরি-
১. ডায়াবেটিস রোগীদের জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
২. র’ক্তে’র শর্করা নিয়ন্ত্রণে আনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে ইনসুলিন শুরু করতে হবে। ইনসুলিন দ্রুততম সময়ের মধ্যে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম।



৩. করোনা উপসর্গ দেখা দিলে নিজেকে আলাদা রাখতে হবে। শরীর বেশি খারাপ না হলে হাসপাতালে না যাওয়াই ভালো। তবে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে হবে।
৪. যাদের বয়স ৬০ বছরের বেশি ও ডায়াবেটিস আছে, তারা নিজেরা কোয়ারেন্টিনে থাকুন। বাজার, শপিং মল, জনবহুল জায়গা, সামাজিক অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলতে হবে। সং’ক্র’ম’ণে’র হাত থেকে বাঁ’চ’তে যে কারো থেকে অন্তত তিন ফুট দূরত্বে থাকতে হবে।
৫. পার্কে বা বাইরে হাঁটতে যাওয়া যাবে না। শর্করা নিয়ন্ত্রণে বাড়িতে, বারান্দায় বা করিডরে হাঁটতে হবে ও হালকা ব্যায়াম করতে পারেন।



৬. ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়াসহ ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। টাকাপয়সা, খবরের কাগজ, পার্সেল ইত্যাদি জিনিস স্পর্শ করলে হাত ধুয়ে নিতে হবে।
৭. ঘরে কেউ অসুস্থ হলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে আলাদা করে ফেলতে হবে। বাইরে থেকে আনা কোনো খাবার খাওয়া যাবে না।
মানসিক চাপ কমানোর উপায়….
করোনার ভয়ে অনেকই এখন ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। কেউ স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। এমতাবস্থায় আ’ত’ঙ্ক-উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা যেন পিছু ছাড়ছে না। মানসিক চাপ তাড়ানোর উপায় কী?



জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মেখলা সরকার বলছেন, মানসিক চাপের বিষয়টি ব্যক্তিভেদে আলাদা। যখন কোনো সংকটের মধ্যে আমরা পড়ি, তখন ব্যক্তিগতভাবে আমরা ভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখাই। করোনা নিয়ে ভয় পাওয়া খুবই স্বাভাবিক। তবে সব সময়ের জন্য ভয় যে খারাপ এমন নয়। ভয় অনেক সময় আমাদের সচেতন হতে সাহায্য করে।
তবে উদ্বিগ্নতা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে মানুষ আ’ত’ঙ্ক’গ্র’স্ত হয়ে পড়ে। তখন তাদের মধ্যে নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক প্রতিক্রিয়া তৈরি করে।



কী ভাবে বুঝবেন মানসিক সমস্যা হচ্ছে?
অধ্যাপক মেখলা সরকার বলেন, অতিরিক্ত মানসিক চাপে ভুগলে মেজাজ খিট-খিটে থাকে। যখন-তখন রেগে উঠছেন। অল্প কিছুতেই তারা অনেক বেশি উত্তেজনা প্রকাশ করছেন। তবে কিছু মানুষের মধ্যে শারীরিক প্রতিক্রিয়া হতে পারে। ফলে বুক ধড়ফড় করা, মাথা ব্যথা ও শ্বাসে সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়া ঘুমের সমস্যাও হতে পারে।
যেভাবে কাটিয়ে উঠবেন–
মানসিক চাপ কাটিয়ে ওঠার জন্য বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন মনোরোগবিদ অধ্যাপক মেখলা সরকার।



তিনি বলেন, সারাবিশ্ব এখন একটি সংকটের মধ্যে রয়েছে। তাই ভাবতে হবে– আপনি একা নন প্রতিটি মানুষ সমস্যার মধ্যে রয়েছে। আপনাকে ভাবতে হবে– সময়টা খারাপ যাচ্ছে। তবে এ অবস্থা কোনোভাবেই স্থায়ী হতে পারে না। এ সমস্যা অবশ্যই কেটে যাবে।
করোনা ভাইরাসের সং’ক্র’ম’ণ থেকে বাঁচতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এতে করে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় অনেকে চাপ অনুভব করছেন। এ বিষয়ে মেখলা সরকার বলেন, শারীরিকভাবে অবশ্যই দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। তবে মানসিকভাবে দূরত্ব বজায় রাখার প্রয়োজন নেই। পরস্পরের খোঁজখবর নিতে হবে। সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।
সং’ক’টে’র সময় অনেক রকম গুজব ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই এ সব বিষয়ে সাবধান হতে হবে।



বিশেষ করে সামাজিকমাধ্যমগুলোতে নানা ধরনের তথ্য ঘুরে বেড়ায়। এ ক্ষেত্রে সবার সব ধরনের তথ্য বিশ্বাস করা উচিত হবে না। যাচাই করে সঠিক সংবাদ বিশ্বাস করতে হবে। বই পড়া মানসিক চাপ কমাতে পারে। তাই একা বসে না থেকে বই পড়তে পারেন।
কোয়ারেন্টিনে থাকলে সময়টি কাজে লাগানো উচিত। এ সময় ভালো কয়েকটা বই পড়তে পারেন। পছন্দের সিনেমা দেখতে পারেন, বাসায় বাগান থাকলে বাগানের পরিচর্যাও করতে পারেন। ঘরের সাজসজ্জা করা যেতে পারে।
প্রতিদিন কিছুক্ষণ মেডিটেশন করুন, দেখবেন চাপ কমে গেছে। এ ছাড়া যারা ধর্মীয় আচার ও প্রার্থনা করতে অভ্যস্ত তারা সেগুলো বাড়িয়ে দিন দেখবেন মানসিক চাপ কমে ফুরফুরে লাগছে।