দিনের বেলা কোরআন পড়ে রাতের আঁধারে ত্রাণ নিয়ে ছুটছেন চিত্রনায়িকা ববি

1430

বিশ্বজুড়ে ক’রো’নার আ’ত’ঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সারা বিশ্বে প্রায় ১২ লাখ মানুষ এই ভাই’রাসে আ’ক্রা’ন্ত হয়েছেন। ৬০ হাজারের বেশি মানুষ মৃ’ত্যুবরণ করেছেন। বাংলাদেশেও ইতিমধ্যে হানা দিয়েছে ক’রো’না ভা’ই’রাস। দেশে এখন পর্যন্ত ৮৮জন ক’রো’না আ’ক্রা’ন্ত মানুষ পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে মৃ’ত্যুবরণ করেছেন ৯ জন।

এমন অবস্থায় দেশের সরকারি বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ব্যক্তিগত উদ্যোগেও অনেক মানুষ গরীব এবং দুস্থ মানুষের পাশে এসে দাড়িয়েছে। বাদ যায়নি রুপালি পর্দার তারকারাও। দেশের এই ভয়া’বহ পরিস্থিতিতে তারাও এগিয়ে এসেছেন নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী। তেমনই একজন তারকা চিত্রনায়িকা ববি।

রাতের আঁধারে দুস্থ মানুষের জন্য খাদ্য সামগ্রী নিয়ে বেরিয়েছেন এ অভিনেত্রী। ক’রোনা’ভাই’রাস থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করতেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বাঁচার বার্তা দিয়েছেন। আর দিনের বেলায় বাসায় কুরআন পড়েই সময় কাটাচ্ছেন।

আর রাত হলেই খাদ্য সামগ্রী নিয়ে অসহায় মানুষদের কাছে ছুটছেন তিনি। গেল কয়েকদিন থেকেই তিনি এমন মানবতার কাজ অব্যহত রেখেছেন। তবে কাউকে জানিয়ে নয়, নীরবেই কাজ করে যাচ্ছেন। প্রাণের তাগিদে ছুটছেন সহায়-সম্বলহীন মানুষের সহযোগিতার জন্য।

জানা গেছে, শহর যখন ঘুমিয়ে পড়ে ঠিক তখনই সহায়-সম্বলহীন মানুষের জন্য খাবার নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন ববি। রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মিরপুরের বেশ কিছু এলাকা, কমলাপুর, মগবাজারসহ বেশকিছু জায়গায় নিজ হাতে ত্রাণ সামগ্রী দিচ্ছেন। এছাড়া নিজের জন্মস্থান জামালপুরের মানুষদের কাছেও তিনি ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন।

দেশে ক’রো’না আ’ক্রা’ন্ত বাড়ছে। বলতে গেলে ঝুঁকির মধ্যে বাইরে গিয়ে ত্রাণ দিচ্ছেন। এতে করে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছেন। ববি এ প্রসঙ্গে বলেন, গণমাধ্যমে সংবাদগুলো দেখলেই ঘরে আর থাকতে পারি না। তাদের মুখে হাসি ফোটাতেই তাদের পাশে দাঁড়ানো।

ববি আরো বলেন, আমরা প্রত্যেকে নিজেদের জায়গা থেকে যদি সচেতন হই তাহলে আমরা এ সংক্রমণ ব্যাধি থেকে অনেক প্রাণকে বাঁচাতে পারব। একটুখানি সতর্ক হলে বেঁচে যাবে হাজারও প্রাণ। গত বছরে বাবাকে হারিয়েছেন চিত্রনায়িকা ববি। বাবার স্মৃতি মনে করে ববি বলেন, আজ বাবা বেঁচে থাকলে মানুষের জন্য আরো বেশি করতেন।

তবে আমি তার মতো করেই চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু এই সব বিষয়ে স্যোশাল মিডিয়া ছবি পোস্ট করে শো-অব করার বিষয়টি আমার ভালো লাগে না। তারপরেও আমাকে দেখে যেন অন্য কেউ এমন কাজে এগিয়ে আসেন সেই চেষ্টা করছি। আল্লাহর রহমতে সকলেই পাশে দাঁড়াবেন। সেই আশায় রয়েছি।

গত ৭ দিনে ১৩০০ ক্ষুধার্ত কুকুরকে খাবার দিয়েছে নায়লা নাঈম !

খাবারের সঙ্কটে পড়েছে শহরের পথকুকুররা – অঘোষিত লকডাউনে স্তব্ধ ঢাকা। দোকান-পাট বন্ধ। বন্ধ পথের ধারের গুমটি থেকে বড়-মাঝারি খাবারের দোকানগুলোও বেশির ভাগ বন্ধ। ক্রেতাও নেই–নেই উচ্ছিষ্ট খাবার। সমাজের প্রান্তিক মানুষদের জন্য বাংলাদেশ তার সেই মানবিক রূপেই। কিন্তু প্রচন্ড খাবারের স’ঙ্ক’টে পড়েছে শহরের পথকুকুররা। এর মাঝেই সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শোবিজের তারকারাও গৃহবন্দী।

এর মধ্যে নিজেদের সামর্থ অনুযায়ি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য নিয়ে অসচ্ছল মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। তবে তারকাদের মধ্যে ব্যতিক্রম দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন মডেল ও অভিনেত্রী নায়লা নাঈম! স্থবির সময়ের মধ্যেও আলোচিত এ মডেল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে পথের কুকুরদের খাবারের যোগান দিচ্ছেন।

গত বুধবার বিকেলে তার সঙ্গে আলাপে নায়লা নাঈম বলেন, আজও ৮০ টির মতো কুকুর খাইয়ে এসেছি। লকডাউনের কারণে কেউ বের হতে পারছে না। আগে চায়ের দোকান, হোটেল থেকে খাবার পেয়ে খেতে পারতো রাস্তার কুকুরগুলো।

কিন্তু এখন সব বন্ধ থাকায় তাদের খাবারের উৎস নেই। এতে করে রাস্তার প্রাণী বিশেষ করে কুকুর অনাহারী থাকছে। মানবিকতার জায়গা থেকে আমি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় পথের কুকুরদের খাবার দিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, গত ৭ দিনে রামপুরা, খিলগাঁও চৌরাস্তা, রাজারবাগ, বনশ্রী, আফতাবনগর, বাড্ডা, লিংক রোড, হাতিরঝিল, গুলশান-১ সহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় ১৩০০ কুকুরের খাবারের ব্যবস্থা করেছি।

একবার খাওয়ালে কয়েক ঘন্টা তাদের খাবারের ঘাটতি পূরণ হচ্ছে। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দেশের হাজারও সংগঠন খুঁজে পাওয়া যাবে। কিন্তু রাস্তায় এসব নিরীহ পশুদের জন্য এখন কাউকে দেখা যাচ্ছে না।

যতদিন নগরীতে লকডাউন অবস্থা চলবে ততো দিনই নায়লা নাঈম নিজের সামর্থ্য দিয়ে রাস্তার কুকুরদের খাইয়ে যাবেন বলে জানান। বিগত ১২ বছর ধরে প্রাণী সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করছেন নায়লা নাঈম। রাস্তায়, বাড়িতে অসুস্থ পশু-পাখি দেখলেই নিজে চিকিৎসা দিয়ে পুনর্বাসনের চেষ্টা করেন।

তিনি বললেন, করোনার আগে থেকে দীর্ঘ পাঁচ বছর আমি যে এলাকায় থাকি সেখানে দৈনিক ৪০-৫০ টি কুকুরকে খাওয়াই। যেখানেই যাই সেখানেই চেষ্টা করি হেল্প করার। আগে যারা আমার মতো পশু-পাখির খাবার দিতো এখন লকডাউনে হয় তো ঘর থেকেই বের হতে পারছে না। তাই আমি আমার পক্ষ থেকে এখন যতটুকু পারছি কাজ করার চেষ্টা করছি।

নায়লা নাঈম বলেন, একেক দিন একেক এলাকায় নিজের স্কুটি নিয়ে বের হই। সাথে থাকে খাবার। মুরগীর বিভিন্ন উচ্ছিষ্ট। কুকুর রাস্তায় সামনে পেলেই খাওয়াই। বসে বসে তো খাওয়ানো সম্ভব নয়। আমার কোনো অর্গানাইজেশন নেই যে সেখান থেকে এ সব খাবারের যোগান আসবে। আমি নিজেই কিনে দিচ্ছি।

এর মধ্যে মাইশা এবং শিমু নামে দুজন আপু আমাকে সাহায্য করেছেন। তিনি বলেন, যতটুকু করার চেষ্টা করছি এটা পুরোপুরিটাই মানবিকতা। পশুপাখি ছাড়াও মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি। করোনাভাইরাস ছাড়াও দুর্ঘটনাতেও মৃ’ত্যু হতে পারে। মারা গেলে এই টাকাপয়সা কী হবে?

তাই চেষ্টা করি যতটুকু পারি প্রয়োজনে পাশা থাকার। সেটা মানুষ হোক বা প্রাণী হোক। এর আগে করোনার এই দুঃসময়ে অভিনেত্রী জয়া আহসানকে দেখা গেছে খাবার নিয়ে রাস্তার কুরুকুরগুলোর পাশে দাঁড়াতে। তিনিও গত এক সপ্তাহ ধরে মগবাজার এলাকার বিভিন্ন গলিতে কুকুরদের নিয়মিত খাবার দিচ্ছেন।