
বিশ্ব জুড়ে মুসলমানদের কাছে অন্যতম পবিত্র ও জনপ্রিয় এই শব্দ “ইনশাআল্লাহ”, যার বাংলা অর্থ দাঁড়ায়– ‘আল্লাহ যদি ইচ্ছা করেন’। আর এই পবিত্র শব্দটি এবার জার্মান অভিধানে যুক্ত হলো।
জানা যায়, এটি ১৮৮০ সাল থেকে জার্মান ভাষার অভিধান ডুডেন ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়ে আসছে। ‘আল্লাহর ইচ্ছায়’ এ শব্দটি মুসলিম বিশ্বের ভবিষ্যতের ঘটনা সম্পর্কিত একটি অভিব্যক্তি। -খবর ইয়েনি শাফাকের।



তবে ডুডেন অভিধানের মুদ্রিত সংস্করণে ইনশাল্লাহ শব্দটি ছাপা হবে কি-না; তা নিয়ে এখনও কর্তৃপক্ষ কোনো বিবৃতি দেয়নি। যে সব অর্থে মুসলমানরা শব্দটি ব্যবহার করেন- কোরআনের সুরা: কাহফ, আয়াত : ২৩-২৪ (প্রথম পর্ব) রয়েছে-
২৩. তুমি কখনও কোনো বিষয়ে এ কথা বল না যে, আমি এটি আগামীকাল করব।



২৪. ‘ইনশাআল্লাহ’ কথাটি না বলে। যদি (কথাটি বলতে) ভুলে যাও, তবে (যখনই তোমার স্মরণে আসবে) তোমার রবকে স্মরণ কর এবং বল, সম্ভবত আমার রব আমাকে এর (গুহাবাসীর বিবরণ) চেয়ে সত্যের নিকটতর পথনির্দেশ করবেন।
এই দুটি আয়াতে রাসূল (সা.)-এর প্রতি বিশেষ নির্দেশনা বর্ণিত হয়েছে। আয়াতে ভবিষ্যৎ সম্পর্কিত কোনো কাজ ‘ইনশাআল্লাহ’ না বলে করতে নিষেধ করা হয়েছে। যদিও প্রাথমিকভাবে এ নির্দেশনা মহানবী (সা.)-এর জন্য ছিল, কিন্তু এই নির্দেশনা সব মুসলমানের জন্য।



এ দিকে জীবনের প্রতিটি কাজে মুমিন ব্যক্তি আল্লাহকে স্মরণ করবে, এমনটাই স্বাভাবিক। নিজের শক্তি-সামর্থ্য ও উপায়-উপকরণের ওপর নির্ভর না করে কেবল আল্লাহর ওপর তিনি নির্ভর করবেন। তাই মুমিন ভবিষ্যতে অনুষ্ঠেয় কাজে ‘ইনশাআল্লাহ’ বলে।
সবচেয়ে বড় সাত কোরআন শরিফ…
৭০০ মিটার দীর্ঘ, ৩৮১ মিটার উচ্চ- মিসরীয় শিল্পী সাদ মোহাম্মদ হাত দিয়ে প্রায় ৭০০ মিটার (দুই হাজার দুইশত ৯৬ ফিট) দীর্ঘ একটি কোরআন শরীফ লিখেছেন। তিন বছর ধরে অনেক পরিশ্রমের তিনি কাজটি শেষ করেছেন।



যখন এটি খোলা অবস্থায় রাখা হয়, তখন তার আয়তন ৩৮১ মিটার উচ্চতা সম্পন্ন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের দ্বিগুণ হবে। নকশা করা কাঠের তৈরি বাক্সের ভেতর পরম যত্নে কোরআনের আয়াত লেখা সেই কাগজ সাজিয়ে রেখেছেন।
ওজন ৫০০ কেজি- ২০১২ সালে আফগানিস্তানের হস্তলিপিকার মোহাম্মদ সাব্বির খেদরির লেখা কোরআন শরীফ ২ দশমিক ২ মিটারের বেশি লম্বা এবং ১ দশমিক ৫৫ মিটারের মতো চওড়া যাতে ২১৮ পৃষ্ঠা রয়েছে। পৃষ্ঠাগুলো কাপড় ও কাগজের তৈরি এবং পৃষ্ঠাগুলোর আকার দৈর্ঘ্যে ৯০ ইঞ্চি বা ২ দশমিক ২৮ মিটার এবং প্রস্থে ৬১ ইঞ্চি বা ১ দশমিক ৫৫ মিটার।



অর্ধমিলিয়ন ডলার ব্যায়ে নির্মিত এই কোরআন শরীফটির পৃষ্ঠার প্রান্তগুলো কারুকার্যমন্ডিত করতে মোট ২১টি ছাগলের চামড়া শুকিয়ে মোড়ানো হয়েছে এবং এটির মোট ওজন ৫০০ কিলোগ্রাম যা লিখতে মোট পাঁচ বছর সময় লেগেছিলো। ক্যালিওগ্রাফার খেদরির করা কোরআনটি অসাধারণ, নজরকাড়া, আনিন্দ্য সুন্দর ও সুসজ্জিত। ৩০ পারায় ৩০টি ভিন্ন ধরনের ক্যালিওগ্রাফির ব্যবহার করেছেন তারা।
ওজন ৮০০ কেজি- রাশিয়ার তাতারস্তানে ৮০০ কেজি ওজনের ৬৩২ পৃষ্ঠা সংবলিত কোরআন শরিফের দৈর্ঘ্য সাড়ে ৬ ফুটের একটু বেশি এবং প্রস্থ ছিল সাড়ে ৩ ফুট। প্রচ্ছদ তৈরি হয়েছিল সোনা ও মূল্যবান পাথরের গাঁথুনিতে। তৈরি করতে সময় লেগেছিল পুরো একটি বছর। তবে সেটা তৈরি করতে কত খরচ পড়েছিল তা অবশ্য অজানাই রয়ে গেছে।



১১৪ ধরনের নকশা- পবিত্র কোরআনের ১১৪টি সূরাকে কম্পিউটার দ্বারা আলাদা আলাদা ডিজাইন করে দীর্ঘ ১০ বছরের চেষ্টায় ভিন্ন ধরনের একটি কোরআনের কপি প্রস্তুত করেছেন লেবাননের চিত্রশিল্পী মারওয়ান আল আরিযা। এমন কাজ কাগজের ওপর হাতে করলে সময় লাগতো প্রায় ২০০ বছর!
পবিত্র কোরআনের ওই কপিকে বিশ্বের প্রথম আর্ট সংস্করণ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে। ৪৭৬ পৃষ্ঠার কোরআন শরিফটির দৈর্ঘ্য ৫৭ সে. মি. এবং প্রস্থ ৪৩ সে. মি.। দৃষ্টিনন্দন ডিজাইন, উজ্জ্বলতা এবং নকশার দিক থেকে এটি বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর কোরআন হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে।
দামি রত্ন খচিত কভার- ভারতের গুজরাট রাজ্যের ভাদোদরা জামে মসজিদে রক্ষিত রয়েছে বড় কোরআন শরিফ। যেটি স্কটল্যান্ড পেপারে প্রিন্ট করা। এর পৃষ্ঠা সংখ্যা ৬৩২। এর ওজন ৮০০ কেজি। এডিশনটি ১৫০x২০০ সে.মি.। এর কভারটি বহু দামি রত্ন দ্বারা খচিত।



অনলাইনে বড় কুরআন- বড় কুরআন শরিফের অন্যতম প্রায় ৫০০ বছরের পুরানো একটি কুরআন যুক্তরাষ্টের ম্যানচেষ্টার জন রাইল্যান্ড গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত রয়েছে। জেমস রবিনসন নামের ফটোগ্রাফার ঐ কুরআন শরিফের হাজার পাতার প্রতিটি পাতা ডিজিটাইজড করায় আর কিছুদিনের মধ্যই তা ইন্টারনেটে পাওয়া যাবে। এ কুরআন শরিফের আকার বড় এক ফ্ল্যাট স্কিন টিভির সমান। এর কোনাকুনি প্রায় এক মিটার দীর্ঘ। ওজন বায়ান্ন কিলোগ্রাম।
এটি বিশ্বের সবচেয়ে সুশোভন কুরআন শরিফগুলোর মধ্য একটি। কুরআন শরিফটিতে মিসরের শেষ মামলুক সুলতান কানসু আল ঘুরি র মোহর অঙ্কিত রয়েছে। এ সুলতানের রাজত্বকাল ছিল ১৫১৬ সাল পর্যন্ত।



সোনার অক্ষরে কুরআন- প্রায় ৩ বছর সময় নিয়ে ১৬৪ ফুটের স্বচ্ছ কালো সিল্কের ওপর সোনা ও রুপা দিয়ে নিপুণ হাতে কুরআন লিখেছেন আজারবাইজানের নারী শিল্পী তুনজালে মেমেদজাদে। প্রত্যেকটি অক্ষর নিজের হাতে লিখেছেন ৩৩ বছরের এই শিল্পী।
১১ দশমিক ৪ ফুট বাই ১৩ ফুট সাইজের এই কুরআনের অক্ষরে লেখা হয়েছে সোনা ও রুপা দিয়ে। এ কুরআনের প্রতিটি পাতায় ফুটে উঠেছে চারুলিপির শৈল্পিক নৈপুণ্য। তুরস্কের প্রেসিডেন্সি অব রিলিজিয়াস অ্যাফেয়ার্স, দিয়ানেট থেকে প্রকাশ পেয়েছে এ কুরআনের প্রথম সংস্করণ।