
পুরান ঢাকায় মাত্র ১০ টাকার বিরিয়ানি- ১০ টাকায় বিরিয়ানি! কীভাবে সম্ভব ? মাত্র ১০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে ডিমসহ পুরো এক প্লেট বিরিয়ানি। ট্র’ল পেইজগুলো বলছে, দেশে নাকি ১০ টাকার বিরিয়ানি চলে? ১০ টাকার বিরিয়ানি দিবি কি-না বল? ১০ টাকার বিরিয়ানি কি জীবনের সবকিছু? ১০ টাকার বিরিয়ানি না খেলে জীবন বৃথা হয়ে যেত?
ফেসবুকের মাধ্যমেই জানা গেল, ১০ টাকার বিরিয়ানি আসল রহস্য। পুরান ঢাকার ওয়ারিতে বনগ্রাম মসজিদের নিচে পাওয়া যায় এ বিরিয়ানি। উদ্যোক্তার নাম তানভীর। সবার কাছে তিনি ‘তানভীর ভাই’ নামে পরিচিত। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে নয়, পুরান ঢাকার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এবং দরিদ্র শিশুদের জন্যই তার এ উদ্যোগ।



প্রধান ক্রেতা হচ্ছেন, আশ-পাশের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকরা। তবে বিরিয়ানির প্রকৃত দাম ৩৫ টাকা। ১০ টাকায় বিরিয়ানি! তিনি কী ভাবে ১০ টাকায় বিরিয়ানি দিচ্ছেন? পোলাও এর চাল ও মুরগী আসল কি-না? ১০ টাকার এ বিরিয়ানি কি স্বাস্থ্যসম্মত? উত্তরও মিলেছে। পুরান ঢাকার কাপ্তান বাজার ঘুরে কমদামে পোলাও এর পুরনো চাল এবং মুরগির ‘ছাটকা’ (রোস্টের অংশ নেওয়ার পর যা বাকি থাকে) সংগ্রহ করেন তানভীর। এ সব দিয়েই তৈরি হয় বিরিয়ানি।
ফেসবুকে শরিফুল ইসলাম রনি লিখেছেন, কারো যদি ১০ টাকা দেয়ার সামর্থ নাও থাকে তাহলেও তানভীর তার হাতে বিরিয়ানি তুলে দেন। কোনো শিশুর হাত থেকে যদি বিরিয়ানির প্লেট প’ড়ে যায় তাহলে তার হাতে নতুন প্লেটে বিরিয়ানি তুলে দেন তানভীর। ওয়ারি এলাকার কর্মজীবী তরুণ রেজুয়ার রহমান বলেন কয়েক বছর ধরে এখানে বিরিয়ানি বিক্রি হতে দেখছি।



বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিরিয়ানি পাওয়া যায়। সব সময়ই ভিড় থাকে। তিনি আরও বলেন, ‘ফেসবুকে এ ১০ টাকার বিরিয়ানি নিয়ে অনেক স’মা’লো’চনা দেখছি। আমার মনে হয় স’মা’লো’চনার করার আগে এখানে এসে বিরিয়ানি খেয়ে যাওয়া উচিত।
কোরআন ও ইসলামকে ভালবেসে আজহারীর মাহফিলে রনি দাসের ইসলাম গ্রহণ
লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মানুষের সমাগমে বিপুল উৎসাহ, উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী পাঁচকমলাপুর দারুল উলুম হাফেজিয়া কওমিয়া মাদ্রাসার ১৩তম ঐতিহাসিক তাফসিরুল কোরআন মাহফিল সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। মহান বিজয় দিবসের দিন মাদ্রাসার পাশের বিশাল মাঠে অনুষ্ঠিত এ মাহফিলের মূল আকর্ষণই ছিলেন প্রধান বক্তা শায়খ মিজানুর রহমান আজহারী।
চুয়াডাঙ্গার কৃতী সন্তান বিশিষ্ট সমাজসেবক আলহাজ্ব সাহিদুজ্জামান টরিকের আয়োজনে ঐতিহাসিক তাফসিরুল এ কোরআন মাহফিলে শরিক হতে গতকাল সকাল থেকেই দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিরা আসতে থাকেন। বাস-ট্রাক, মাইক্রো-মিনিবাস, সিএনজি-অটো, মোটরসাইকেলসহ নানা ধরনের ছোট-বড় যানবাহনযোগে মাহফিলে উপস্থিত হয়ে আলোচনা শোনেন কয়েক লাখ মানুষ।



গতকাল দুপুরের পরপরই সড়কগুলোতে প্রচুর যানজটের সৃষ্টি হলেও ধর্মপ্রাণ মানুষেরা সে সব উপেক্ষা করেই পৌঁছান মাহফিলস্থলে। আয়োজকদের পক্ষ থেকে বিশালাকার প্যান্ডেলের প্রস্তুত রাখা হলেও মাঠ ছাপিয়ে দর্শক শ্রোতাদের জায়গা নিতে হয় আশপাশের সড়ক ও খালি জায়গায়। বিকেল চারটা নাগাদ দেশের প্রায় ৩০ জেলা থেকে আগত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের অংশগ্রহণে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় মাহফিল-প্যান্ডেল। তবে মাহফিলের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় মাগরিবের নামাজের পর। লাখ লাখ মানুষের অংশগ্রহণে প্যান্ডেলই আদায় করা হয় নামাজ ।
রাত ৯টা নাগাদ মাহফিল ময়দানে এসে হাজির হন প্রধান বক্তা বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও আলোচিত বক্তা, বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলার ও কোরআন গবেষক শায়খ মিজানুর রহমান আজহারী। তাকে কাছ থেকে একনজর দেখতে খানিকটা উ’ত্তা’ল হয়ে ওঠে মাহফিলে উপস্থিত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।
তবে শায়খ মিজানুর রহমান আজহারী মঞ্চে উঠে উপস্থিত সবার উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে বয়ান শুরু করলে মুহূর্তেই পরিস্থিতি পাল্টে যেতে থাকে। তাঁর জন্য অধীর আগ্রহে থাকা মানুষেরা নিশ্চুপ হয়ে তার কথাই বুদ হয়ে যান। টানা ১ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট ধরে পবিত্র কোরআন ও হাদিস থেকে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন তিনি। এর মধ্যে অন্যতম ছিল নারীর মর্যাদা, মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর ওপর কোরআন নাজিল, ইসলামের দাওয়াত ও মহান বিজয় দিবস। তবে এসবের মধ্যে তার আলোচ্য বিষয়ের মূল তাৎপর্য ঘিরে ছিলে ‘সুরা আদ্ দোহা’।



দেরিতে আসায় মাহফিল ময়দানে জায়গা না পেয়ে যেখানে-সেখানে, রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রধান বক্তার বক্তব্য উপভোগ করেন অনেকেই।মাহফিলের আলোচনা শেষে মোনাজাতের আগমুহূর্তে পবিত্র কোরআনকে ভালোবেসে ও ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে উপস্থিত লাখ লাখ মানুষের সঙ্গে পবিত্র কালেমা পড়ে রনি কুমার দাস নামের এক হিন্দু যুবক নিজ ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।
শায়খ মিজানুর রহমান আজহারী তাকে পবিত্র কালেমা পাঠ করান। স্বেচ্ছায় ধর্মান্তরিত হওয়া ওই যুবক ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর তার নাম রাখা হয়েছে আব্দুর রহমান। তার বাড়ি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সরোজগঞ্জে। তিনি চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের স্নাতক শ্রেণির দর্শন বিভাগের ছাত্র।