
কিছু ফল এবং সবজি আছে যেগুলোর খোসা ছাড়িয়ে নিলে মানব দেহের জন্য উপকারি অনেক পুষ্টি উপাদানও এর সঙ্গে চলে যায়। এমনটা করা হয় সাধারণত এই ভেবে যে খোসা নোংরা এবং এতে কীটনাশক ও অন্যান্য রাসায়নিক লেগে আছে।
কিন্তু আপনি জানেন কি বেশিরভাগ ফল এবং সবজির খোসাই বাস্তবে অনেক স্বাস্থ্যকর এবং আপনার ডায়েটের পুষ্টিউপাদান বাড়াতে সহায়ক? না জানলে আজ থেকেই এই ৬টি ফল ও সবজির খোসা না ছাড়িয়েই ভক্ষণ করুন। তাহলেই প্রমাণ পেয়ে যাবেন হাতে-নাতে।
আসুন জেনে নেওয়া যাক, কোন সব ফল বা সবজির খোসার কী গুণাগুণ-
১) আলুর খোসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন আর পটাসিয়াম। এছাড়াও এতে রয়েছে ভিটামিন বি, সি এবং প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান।
২) শসার খোসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান, পটাসিয়াম আর ভিটামিন-কে!
৩) লাউ বা কুমড়ার খোসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক যা ত্বককে সতেজ রাখে। বাড়ায় ত্বকের উজ্জ্বলতাও!
৪) আপেলের খোসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পেকটিন। এই পেকটিন হল এক ধরনের ফাইবার যা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। একই সঙ্গে পেকটিন রক্তে সুগার আর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতেও সাহায্য করে।
৫) বেগুনের খোসায় রয়েছে ‘নাসুনিন’ নামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা অ্যান্টি-এজিং-এ সহায়ক। এ ছাড়াও বেগুনের খোসা ত্বককে সতেজ রেখে উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে।
৬) কলার খোসায় রয়েছে লুটেন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতে সাহায্য করে। কলার খোসায় থাকা ট্রিপটোফ্যান শরীরে সেরোটনিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। আর এই সেরোটনিন মন মেজাজ ভাল রাখতে সাহায্য করে।
খালি পেটে কলা খেলে কী হয়?
ডিম, দুধের পাশাপাশি সকালের খাবারের তালিকায় কলা রাখতে দেখা যায় অনেককেই। এর অবশ্য কারণও আছে অনেক। কলায় রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ। দ্রুত শক্তি যোগাতেও কলার জুড়ি নেই। তাই সুস্বাস্থ্য বজার রাখতে সকালের খাবারে জায়গা দেয়া হয় কলাকে।
স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিলেও বিশেষজ্ঞরা নিষেধ করছেন সকালের খাবারের তালিকায় কলা নামক ফলটি রাখতে। খালি পেটে কলা খেলে সত্যি কি কোনো সমস্যা হয়? নিষেধের কারণই বা কী? জেনে নিন-
১- কলায় ভিটামিন বি৬ থাকে প্রচুর পরিমাণে। যদিও এর সঙ্গে ভিটামিন সি-র কোনো সম্পর্ক নেই। একটা মাঝারি মাপের কলা আপনাকে শরীরে ১০ শতাংশ প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি দিতে পারে।
২- কলা পটাশিয়াম সমৃদ্ধ, আছে ফাইবারও। গ্যাস-অম্বল ও হজমের সমস্যা দূর করে কলা। এতে তিনটি ন্যাচেরাল সুগার থাকে, সুক্রোজ, ফ্রুকটোস ও গ্লুকোজ। এতে কোলেস্টেরল ফ্রি এনার্জি তৈরি হয় শরীরে।
৩- কলায় থাকা সুগার শরীরের প্রায় ২৫ শতাংশ প্রয়োজন মেটায়। কিন্তু যুক্ত হয়ে শরীরে প্রবেশ করলে অ্যাসিডিক নেচার গ্লুকোজের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।
৪- দিনের শুরুতে কলা খেলে, এর ফলে আপনার আরও ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত লাগতে শুরু করে। সেক্ষেত্রে শরীরে ক্ষতি হয় অনেক বেশি। ক্ষুধা এতটাই বাড়তে থাকে যে খাওয়ার পরিমাণ বেশি হয়ে শরীরে ওজন বাড়তে থাকে। তাই খালি পেটে নয়, সকালের খাবারের অন্তত ঘণ্টাখানেক পরে খেতে পারেন কলা।