
মানবজীবনের স্বভাগত পরিচ্ছন্নতা, মানসিক ভারসাম্য ও চারিত্রিক পবিত্রতার অন্যতম উপায় বিয়ে। বিয়ে করার জন্য যুবকদের প্রতি বিশ্বনবি ঘোষণা করেছেন-
‘হে যুবক সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যারা বিয়ে করতে সক্ষম, তারা যেন বিয়ে করে নেয়। কারণ বিয়ে (মানুষের) দৃষ্টি অবনত রাখতে এবং গোপনাঙ্গের হেফাজতে অধিক কার্যকর। আর যে ব্যক্তি বিয়ে করতে অক্ষম সে যেন রোজা রাখে। কেননা রোজা তার যৌ’ন’ক্ষু’ধাকে অবদমিত করে।’ (মিশকাত)



যারা বিশ্বনবির ঘোষণা অনুযায়ী বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হবেন, সেসব নব দম্পতির জন্য রয়েছে বিশ্বনবির বিশেষ দোয়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নব দম্পতিকে অভিনন্দন জানাতেন, তাদের দাম্পত্যজীবনের কল্যাণ কামনা করে দোয়া করতেন। হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিবাহিত ব্যক্তিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলতেন-
উচ্চারণ- ‘বারাকাল্লাহু লাকা, ওয়া বারাকা আলাইকা, ওয়া জামাআ বাইনাকুমা ফি খাইরিন’ (তিরমিজি, মিশকাত)
অর্থ : ‘আল্লাহ তোমাকে বরকত দান করুন, তোমাদের উভয়ের প্রতি বরকত নাজিল করুন এবং তোমাদের কল্যাণের সঙ্গে একত্রে রাখুন।’



বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ-অনুকরণ ও দিক-নির্দেশনায় উম্মতে মুসলিমাও নব-দম্পতির জন্য এ দোয়া করবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রিয় নবির শেখানো দোয়ার মাধ্যমে নব দম্পতির কল্যাণে দোয়া করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এক হাজার নেকি লাভ হবে যে আমলে
দৈনিক এক হাজার নেকি লাভ ও এক হাজার গোনাহ মাফ হওয়া নিশ্চয় মুমিনের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। কোনো মুমিন এমন সৌভাগ্য হাতছাড়া করতে চাইবে না। প্রিয়নবী (সা.) উম্মতকে এমনই একটি আমল শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘তোমাদের জন্য কি দৈনিক এক হাজার নেকি লাভ করা কঠিন কিছু? তখন এক সাহাবি বলেন, আল্লাহর রাসুল! কী করলে এক হাজার নেকি লাভ করা যাবে?



তখন নবীজী বলেন, ‘এক শ বার সুবহানাল্লাহ বললে এক হাজার নেকি লেখা হবে অথবা (কোনো কোনো বর্ণনায়) এক হাজার গোনাহ মোচন হবে। (মুসলিম, হাদিস : ২৬৯৮; ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৮২৫)
এ ছাড়া হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজের পর দশবার ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকা লাহু। লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু। ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির’ পড়বে, এর বিনিময়ে তার আমলনামায় চারজন গোলাম আজাদ করার সওয়াব লেখা হবে, ১০টি নেকি লেখা হবে, ১০টি গোনাহ মাফ হবে, ১০টি মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে এবং এ কালিমাগুলো সন্ধ্যা পর্যন্ত তার জন্য শয়তান থেকে রক্ষার কারণ হবে।
মাগরিবের পর পড়লে অনুরূপ সওয়াব মিলবে এবং সকাল পর্যন্ত শয়তান থেকে হেফাজতে থাকবে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৩৫১৮; তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৩৪)
বিভিন্ন বর্ণনায় রয়েছে, নামাজের বৈঠক থেকে ওঠার আগে, কোনো কথা বলার আগেই এই দোয়া পড়বে। কোনো বর্ণনায় শুধু নামাজের পর পড়ার কথা এসেছে। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৩৪, ৩৪৭৪; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৭৯৯০)



অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘…তার আমলনামায় এক নেকি লেখা হবে, এক শ গোনাহ মাফ হবে এবং একজন গোলাম আজাদ করার সওয়াব পাবে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৮৭১৯)
অন্য হাদিসে এসেছে, ইসমাঈল (আ.)-এর বংশধরের একজন গোলাম আজাদ করার সওয়াব পাওয়া যাবে। অন্য বর্ণনায় এসেছে, দশজন গোলাম স্বাধীন করার সওয়াব পাওয়া যাবে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৫০৭৭; তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৩৪; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৩৫৬৮)