বিয়ে বাড়িতে বরযাত্রীর পরিবর্তে খাবার খেয়েছে এতিমরা !

3028

খাবার খেয়েছে এতিমরা – বিয়ে বাড়িতে স্বজনদের বেশ আনাগোনা। বাড়িতে খাবারের বেশ আয়োজন চলছে। সুস্বাদু খাবারের ঘ্রাণ বাড়িসহ চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে বিয়ে বাড়ির কোনো মেহমান এ খাবার খেতে পারেননি। পুরো খাবার খেয়েছেন এতিমখানার এতিমরা।

শনিবার চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার বলেশ্বরপুর গ্রামে বাল্যবিয়ে পণ্ডের পর খাবার স্থানীয় এতিমখানায় পাঠানো হয়। বাল্যবিয়েটি পণ্ড করেন আলমডাঙ্গার ইউএনও লিটন আলী।

তিনি জানান, সদ্য এসএসসি পরীক্ষা দেয়া আলমডাঙ্গার বলেশ্বরপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে আইরিন আক্তার অ্যানির সঙ্গে দামুড়হুদার বিষ্ণুপুর গ্রামের এক ছেলের বিয়ে ঠিক করা হয়।

গোপনে বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে অ্যানির বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেন তিনি। তখন বরপক্ষ কনের বাড়িতে পৌঁছায়নি। তাৎক্ষণিক সব আয়োজন বন্ধ করে কনের বাবাকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে তার কাছ থেকে মুচলেকা নেয়া হয়েছে।

তিনি আরো জানান, বরযাত্রীদের জন্য আয়োজন করা সব খাবার পাশের একটি এতিমখানায় দেয়া হয়েছে। সেখানে বরযাত্রীর খাবার খেয়েছেন এতিমরা।

পানির নিচে মেয়ে রোশনিকে বু কেই জ’ড়ি’য়ে রেখেছিলেন মৃ ত বাবা

রাজশাহীর পদ্মা নদীতে বর-কনেবাহী দুটি নৌকা ডু’বে যাওয়ার পর এ পর্যন্ত ছয়জনের ম’র’দে হ উদ্ধার করা হয়েছে। ম’র’দে হ দুটি উ’দ্ধারের সময় আ’বেগ ধরে রাখতে পারেননি উ’দ্ধারকর্মীরাও। পানিতে ডু’বে থাকলেও শামীম হোসেন (৩৫) নামের এক ব্যক্তি তার সাত বছরের মেয়ে রোশনি খাতুনকে বু কেই জ’ড়ি’য়ে রেখেছিলেন।

রোশনিও ধরে ছিলেন বাবাকে। শুক্রবার রাতে রাজশাহী মহানগরীর শ্রীরামপুর এলাকার বি’প’রীতে যেখানে নৌকা ডু’বে যায় সেখানেই শনিবার বিকালে তাদের লা শ পাওয়া যায়।

পাশেই পাওয়া যায় ডু’বে যাওয়া নৌকাটি। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল বাবা-মেয়ের লা শ উদ্ধার করে। এমন দৃশ্য দেখে আ’বেগাপ্লুত হয়ে ওঠেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের রাজশাহী সদর স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আব্দুর রউফ বলেন, ছোট্ট মেয়েটার ভরসার জায়গা তার বাবা। সেই ভরসাতেই হয়তো মেয়েটা তার বাবাকে ধরে ছিল।

আর তার বাবাও তাকে বু কে টেনে নিয়েছিলেন। একজন বাবা তার মেয়েকে যে কত ভালোবাসেন তা হয়তো এ দৃশ্যেই বোঝা যায়। এ কথা বলতে গিয়েই কণ্ঠ ভারি হয়ে ওঠে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তার।

নি হ’ত শামিম কনে সুইটি খাতুনের চাচা। সুইটিসহ এখনো তিনজন নি’খোঁ’জ। নৌকাডু’বিতে শামিমের স্ত্রী মনি খাতুনও (৩০) মা রা গেছেন।

সকালে তার লা শ উ’দ্ধার হয়। নৌকাডু’বি থেকে প্রা’ণে বেঁ’চে আসা এক তরুণীর ভাষ্যমতে, মনি খাতুন সাঁতার কাটতে কাটতে তার ছেলে আলভিকে (১২) উদ্ধার করতে যাওয়া ট্রলারে তুলে দেন। কিন্তু নিজে আর উঠতে পারেননি।

আর মেয়েকে ধরে রেখে উঠতে পারেননি তার স্বামী। এই পরিবারটিতে ছেলে আলভি ছাড়া আর কেউ বেঁ’চে নেই। আলভি অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে।

রাজশাহীর পদ্মায় শুক্রবার সন্ধ্যায় বিয়ে বাড়ির নৌকাডু’বির ঘটনায় শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কনেকে ফিরে পাবার আসায় বসেছিলেন বর রুমন আলী (২৪)।

শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৬ জনের মৃ ত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। নি হ’তদের মধ্যে দুটি পরিবারের ৫ জন সদস্য রয়েছেন।

ম’র্মা’ন্তিক এ মৃ ত্যুর ঘটনায় পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। দিনভর স্বজনরা ঘটনাস্থল রাজশাহী মহানগরীর শ্রীরামপুর এলাকায় নি’খোঁ’জদের খোঁ’জে অপেক্ষা করেছেন।

এ সময় স্বজন হারানোর ব্যথায় সবাই হয়ে পড়েন শো’কে স্ত’ব্ধ। এ ছাড়া কনের বাড়িতে চলে শো’কের মাতম। সন্ধ্যার পরে শো’ক আর বেদ’নায় নি হ’তদের চিরবিদায় জানান। তাদের দা’ফ’ন সম্পন্ন হয়।

নৌকাডু’বির পর ভাগ্যক্রমে বর রুমন আলী (২৪) কোনোরকমে প্রা’ণে বাঁ’চলেও নববধূ সুইটি খাতুন পূর্ণির (১৬) সন্ধান মেলেনি। সন্ধ্যা ৭টার পরও তাকেসহ নি’খোঁ’জ আরও ৩ জনকে উ’দ্ধারে অ’ভিযা’ন অব্যাহত রাখেন ডু’বুরি দলের সদস্যরা। তবে উ’দ্ধার তৎপরতার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী, তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হবে।

এ সময়ের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে শনিবার বিকালে পদ্মাপাড়ে রুমন বলেন, আমি আর পূর্ণি পাশাপাশি বসেছিলাম। নৌকা ডু’বে যাওয়ার পর সবাই বাঁ’চার চেষ্টা করছিলেন। এ সময় পূর্ণি আমাকে আঁকড়ে ধরে। আমাদের উদ্ধারে একটি বালুবাহী ট্রলার এগিয়ে আসে।

রুমন বলেন, ট্রলারটি থেকে একটি মোটা র’শি ফেলা হয়। এ সময় সবাই র’শিটি ধরে বাঁ’চার চেষ্টা করেন। আমিও রশিটি ধরার চেষ্টা করি। ধরেও ফেলি। রশি ধরা নিয়ে এ সময় সবাই হুড়োহুড়ি করার কা’রণে পূর্ণি আমার কাছ থেকে বি’চ্ছিন্ন হয়ে যায়। তার আগ পর্যন্ত দু’হাত দিয়ে সে আমাকে শক্ত করে ধ’রেছিল। শেষমুহূর্ত পর্যন্ত সে আমাকে ধরে বাঁ’চা’র চেষ্টা করেছিল।