ভয়কে জয় করে নারায়ণগঞ্জে একসঙ্গে ৩ সন্তান জন্ম দিয়েছে এক মা !

1547

দেশের বর্তমান এই অচলাবস্থার মধ্যে করোনা’ভা’ইরাসের ভয়কে জয় করে বৈশাখের প্রথম দিন একসঙ্গে তিন সন্তান জন্ম দিয়েছেন এক মা। ১০ বছর সংসার জীবনের সাধনায় একসঙ্গে তিন সন্তান জন্ম দিলেন নারায়ণগঞ্জের ফেরদৌসী বেগম। একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম হওয়ায় আনন্দে মেতে ওঠেন ফেরদৌসীর পরিবারের সদস্যরা।

ফেরদৌসী বেগমের সিজারিয়ান অ’পা’রে’শ’নে অংশ নিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের গাইনি চিকিৎসক কামরুন্নাহার ও তার দুই ছেলে চিকিৎসক সাদ ও সামি। মা ও তিন নবজাতক সুস্থ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ডা. কামরুন্নাহার।

করোনার সং’ক্র’ম’ণ এড়াতে এবং মা ও নবজাতকদের নিরাপত্তার স্বার্থে মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) বেলা ১১টায় ঢাকার একটি হাসপাতালে ফেরদৌসী বেগমের সিজারিয়ান অপারেশন করেন তিন চিকিৎসক।

গাইনি চিকিৎসক কামরুন্নাহার বলেন, করোনা’ভা’ইরাসের ভয়কে জয় করে পহেলা বৈশাখে একসঙ্গে তিন সন্তান জন্ম দিয়েছেন ফেরদৌসী বেগম। দীর্ঘ ১০ বছরের সংসার জীবনের সাধনায় এই প্রথম তাদের সন্তান হলো। মহান আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে খুবই সুন্দরভাবে অ’পা’রে’শ’ন সফল হলো।

কামরুন্নাহার বলেন, মা ও তিন নবজাতক সুস্থ রয়েছে। এর মধ্যে এক পুত্রসন্তান ও দুটি কন্যাসন্তান। ওজন একটু কম হওয়ায় এক নবজাতককে এনআইসিইউতে রাখা হয়েছে। সিজারিয়ান অপারেশনে আমাকে সহযোগিতা করেছে আমার দুই ছেলে ডা. সাদ ও ডা. সামি।

তিনি আরও বলেন, কত বিস্ময়-বেদনা জাগানিয়া দৃশ্য দেখছি প্রতিদিন। দেখছি কত আর্তনাদ-আহাজারি। এসবের মধ্যেও শুনি সুরেলা ধ্বনি। আমার কাছে সবচেয়ে সুখকর ধ্বনি ডেলিভারির পরপরই নবজাতকের কান্না।

ডা. কামরুন্নাহার বলেন, অচেনা আজকের বৈশাখে নতুনের আগমন নতুন করে আশার আলো জোগায়। সবার জন্য বয়ে আনে মঙ্গলবার্তা। করোনার অন্ধকারে ছেয়ে যাওয়া অমাবস্যার রাত ভোর হবেই। উঠবে একটি সোনালি সূর্য। করোনামুক্ত একটি সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায় সবাই নিরাপদে ঘরে থাকুন, আমরা আছি বাইরের যু’দ্ধে। আমরা সচেতন হই এবং সবার জীবন র’ক্ষা করি।

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পহেলা বৈশাখে জাটকা বিক্রির মহোৎসব

বাঙালির প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখ উদযাপনের অন্যতম অনুষঙ্গ পান্তা-ইলিশ। তবে এবার সেই ঐতিহ্য স্তব্দ হয়ে গেছে করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এবার প্রতি ঘরেই বৈশাখ উৎসব পালন করা হচ্ছে। আবার জাটকা সংরক্ষণে মেঘনা নদীতে নিষেধাজ্ঞা চলছে। কিন্তু লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন মাছের ঘাটে দেখা গেছে জাটকা বিক্রির ধুম। এজন্য মৎস্য বিভাগ ও কোস্টগার্ডের দায়সারা কাজকে দোষারোপ করছেন সচেতন মহল।

এদিকে করোনা’ভা’ইরাসের প্রাদুর্ভাব কমাতে লক্ষ্মীপুরে লকডাউন চলছে। ঘরে থাকতে বলা হয়েছে মানুষকে। বাজারে গেলেও নিরাপদ দূরত্বে থাকার জন্য বলা হয়েছে। হাটবাজারে দোকানের সামনে সুরক্ষা বৃত্ত এঁকে দিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু কে শুনে কার কথা!

জেলার রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী খাসেরহাট বাজারে মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) সকালের চিত্র দেখে মনে হয়েছে মাছের মেলা বসেছে। একজনের গায়ের সঙ্গে অন্যজনের গা লেগে আছে। মনে হচ্ছে যেন প্রশাসনের অনুমতি পেয়ে জাটকার মেলা বসেছে। জাটকা শিকারে নিষেধাজ্ঞা আর করোনা ক্রান্তিকালে সঙ্গরোধে থাকতে হলেও প্রশাসন এ নিয়ে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ সবার।

মেঘনা উপকূলীয় এলাকার প্রত্যেকটি ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসন জাটকা সংরক্ষণে দায়িত্ব পালনের কথা ছিল। কিন্তু এখানে চিত্র ভিন্ন। প্রশাসনও রয়েছে চুপচাপ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কোস্টগার্ডের দায়সারা কাজের কারণে চরভৈরবের রুহুল আমিন মেম্বারের তত্ত্বাবধানে একটি সিন্ডিকেট মাছ শি’কা’র করছেন। সিন্ডিকেটে রায়পুরের মেঘনা নদীর চরগজারিয়া গ্রামের রুবেল মাঝি ও শাহ আলম মাঝি জড়িত রয়েছেন। নদীতে মাছ শিকারের পর একটি ভাগ কোস্টগার্ডকে দেয়া হয়।

উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গেছি। কিন্তু কাউকে খুঁজে পাইনি।

জেলেরা ভোরে মাছ বিক্রি করে পালিয়েছেন। ইউপি মেম্বার ও চৌকিদারদের নিয়ে বৈঠক করব এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য। চাঁদপুরের চর ভৈরবের রুহুল আমিন মেম্বারসহ একটি সিন্ডিকেটের নৌকা রায়পুরে ঢুকে মাছ শি’কা’র করে বলে নিশ্চিত হয়েছি।

রায়পুরের হায়দরঞ্জ ক্যাম্পের কন্টিজেন্ট কমান্ডার (সিসি) আবদুর রহমান বলেন, জাটকা সংরক্ষণে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কার নৌকা কখন মাছ শি’কা’র করতে যায়, সেটা আমরা জানি না। অভিযান চালিয়ে যাকেই নদীতে দেখতে পাই, সঙ্গে সঙ্গে তাকেই আটক করা হয়। বাজারে জাটকা বিক্রি ও করোনা প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে আমরা ছাড়াও কাজ করার কথা পুলিশ প্রশাসনের।