
অত্যন্ত তাৎপর্যমণ্ডিত ও ফজিলতপূর্ণ ইবাদত কোরবানি করা। ইসলামে যত বিধান আছে, তার মধ্যে কোরবানি অন্যতম। স্বাভাবিক জ্ঞানসম্পন্ন, প্রাপ্তবয়স্ক, মুসলিম যদি ‘নিসাব’ পরিমাণ সম্পদের মালিক থাকেন, তাদের পক্ষ থেকে একটি কোরবানি দেওয়া ওয়াজিব বা আবশ্যক।



কারা কোরবানি করবেন: হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সামর্থ্য রাখে, সে যেন কোরবানি করে।’ অন্য রেওয়াতের মধ্যে এসেছে, ‘সামর্থ্য থাকার পরও যদি সে কোরবানি না করে, তাহলে সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।’
প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী—যে ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের ভেতরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে; তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব।



অর্থ-কড়ি, টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, গহনা-অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির অতিরিক্ত জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সব আসবাবপত্র কোরবানির নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।
মহা’মা’রিতে কোরবানি না করলেও হবে? মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদের মতে, সামর্থ্যবানরা এই করোনার সময়েও কোরবানি বাদ দিতে পারবেন না। এই ওয়াজিব বাদ দিলে গুনাহ হবে৷ যদি কোনো মুসলামান কোরবানি না করে সেই টাকা দান করে দেন?



এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না। নামাজ বাদ দিয়ে শুধু রোজা রাখলে তাতে নামাজের ফরজ আদায় হয় না। নামাজও পড়তে হবে। রাসুল (সা.) হিজরত করার পর প্রতিবছর কোরবানি করেছেন। এরপর থেকে তিনি কখনো কোরবানি করা থেকে বিরত থাকেননি।
ইসলামের ইতিহাসে কোরবানি বাদ দেওয়ার কোনো নজির নাই। তবে তিনটি পরিস্থিতিতে ব্যাক্তিগতভাবে কোনো মুসলমান কোরবানির সময় কোরবানি না-ও দিতে পারেন। কিন্তু পরে তাকে কাফফারা আদায় করতে হবে। সুবিধামতো সময়ে কোরবানির টাকা দিয়ে



একটি পশু কিনে গরিবের মধ্যে বিলিয়ে দিতে হবে বলে জানান মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। ওই তিনটি পরিস্থিতি হলো: সাধারণ শঙ্কা, প্রবল আশঙ্কা এবং নিশ্চিত ক্ষ’তি৷ করোনার সময় কোরবানি দিলে শারীরিক ক্ষ’তি
অথবা ক্ষ’তি হবে এমন তথ্যগত প্রমাণ পেলে কিংবা নিশ্চিতভাবে জীবনহানির আশঙ্কা হতে পারে এমন ক্ষেত্রে কোরবানির সময় কোরবানি না-ও দিতে পারেন।



মহা’মা’রিতে স্বস্তিতে পশু কেনার উপায়: করোনার কারণে মানুষের মনে আ’ত’ঙ্ক বিরাজ করছে। বিশেষত অনেকের পশুর হাটে যেতে অনীহা রয়েছে। অন্যদিকে অনলাইন হাটগুলোতে পশু কেনাকাটার বিজ্ঞাপনও নজরে পড়ছে। আগ্রহ দেখা যাচ্ছে কিছু মানুষের।
সে হিসেবে ক্রেতারা ঘরে বসেই অর্ডার দিয়ে কিনতে পারছেন। সরকারিভাবে অনলাইন পশুর হাট চালু হয়েছে বিভিন্ন শহরে। জেলা-উপজেলা পর্যায়েও হয়তো দেখা যেতে পারে।