মহা’মা’রী রোগ নিয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর মহামূল্যবান বাণী

2767

মহানবী (সাঃ) এর মহামূল্যবান বাণী- আল্লাহ মহান। তাঁর দয়ার কারনেই এই সুন্দর পৃথিবীতে আমাদের প্রিয় নবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) এর আবির্ভাব ঘটেছিল।

মুহাম্মাদ (সা) ঘৃণা’ভরে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন আরাম ও সুখের জীবন। তিনি যেমন সাহসী ও অকুতোভয় ছিলেন, তেমনি ছিলেন কোমল মনের মানুষ। তাঁর ব্যাক্তিত্বের প্রভাবে ইসলামের বিস্তার হয়েছে।

মহা’মা’রী নিয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর কিছু মহামূল্যবান বাণী আছে এবার সে-গুলো জেনে নেয়া যাক…

১, যখন মহা’মা’রী ছড়িয়ে পড়বে, আর তুমি সেখানেই রয়েছো, তখন সেখানে তুমি অবস্থান করবে (সেখান থেকে পলায়ন করবে না)।
– মিশকাতুল মাসাবীহ ৬১

২, মহা’মা’রী কারো কারো জন্য পরীক্ষাও বটে। উসামা ইবন যায়দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ ‘’প্লেগ শাস্তির প্রতিক। মহীয়ান গরীয়ান আল্লাহ তায়ালা তা দ্বারা তাঁর বান্দাদের কতিপয় ব্যক্তিকে পরীক্ষায় ফেলেছেন।

তাই কোনো অঞ্চলে এর প্রভাবের খবর পেলে, তোমরা সেথায় যেয়ো না এবং কোনো অঞ্চলে অবস্থানকালে সেখানে প্লেগ লক্ষ্য করলে সেখান থেকে পালিয়ে যাবে না’’ মুসলিম ৫৬৬৬-(৯৩/…)

৩, আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সাঃ)-কে প্লেগ রোগ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে, উত্তরে তিনি বলেনঃ ‘’এটি এক ধরনের আযাব। আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাদের প্রতি ইচ্ছা করেন, তাঁদের উপর তা প্রেরন করেন।

আর আল্লাহ তায়ালা তাঁর মু’মিন বান্দাগনের উপর তা রহমত করে দিয়েছেন। অতএব কোনো ব্যক্তি যখন প্লেগ রোগে আ’ক্রা’ন্ত যায়গায় সাওয়াবের আশায় ধৈর্যধারন করে অবস্থান করে এবং অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস থাকে যে, আল্লাহ তাকদীরে যা লিখে রেখেছেন তা-ই হবে,

এছাড়া আর কোনো বিপদ তার উপর আসবে না, তাহলে সে একজন শহীদের সমান সাওয়াব পাবে’’ বুখারী ৩৪৭৪, ৫৭৩৪, ৬৬১৯;

৪, উবাদাহ ইবন সামিত (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ ‘’আল্লাহর রাস্তায় নি’হ’ত ব্যক্তি শহীদ, যে ব্যক্তি প্লেগ বা মহা’মা’রীতে মা’রা যায়, সে শহীদ। যে ব্যক্তি পেটের পীড়ায় মা’রা গেছে সে শহীদ, যে স্ত্রী-লোক পেটের সন্তান সহ মৃ”ত্যুবরণ করেছে, সেও শহীদ’’ দারেমী ২৪৫৩ (সনদ সহীহ)

মহানবী (সা.) সবসময় যে নিয়মে খাবার খেতেন…

খাওয়ার শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ বলা : রাসুল (সা.) খাওয়ার প্রারম্ভে সব সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলে খাওয়া শুরু করতেন।

এবং তাঁর সঙ্গীদের ‘বিসমিল্লাহ’ বলতে উৎসাহিত করতেন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর নাম নিয়ে ও ডান হাত দ্বারা খানা খাও। এবং তোমার দিক হতে খাও।’ (বুখারি, হাদিস : ৫১৬৭, তিরমিজি, হাদিস : ১৯১৩)

আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যখন তোমরা খানা খেতে শুরু করো, তখন আল্লাহর নাম স্মরণ করো। আর যদি আল্লাহর নাম স্মরণ করতে ভুলে যাও, তাহলে বলো, ‘বিসমিল্লাহি আওওয়ালাহু ওয়া আখিরাহ।’ (রিয়াজুস সলেহিন : ৭২৯)

ডান হাত দ্বারা খাবার খাওয়া : রাসুল (সা.) আজীবন ডান হাত দ্বারা খাবার খেয়েছেন এবং বাঁ হাত দ্বারা খাবার খেতে মানুষকে নিষেধ করেছেন।

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা বাঁ হাত দ্বারা খাবার খেয়ো না ও পান কোরো না। কেননা শয়তান বাঁ হাতে খায় ও পান করে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৯১২)।

আঙুল চেটে খাওয়া : আঙুল চেটে খাওয়ার ফলে বরকতলাভের বেশি সম্ভাবনা থাকে। কারণ খাবারের বরকত কোথায় রয়েছে মানুষ তা জানে না।

রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা যখন খাবার গ্রহণ করো তখন আঙুল চেটে খাও। কেননা বরকত কোথায় রয়েছে তা তোমরা জানো না।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৯১৪)

হেলান দিয়ে না খাওয়া : কোনো কিছুর ওপর হেলান দিয়ে খাওয়া নিষিদ্ধ। হেলান দিয়ে খাওয়ার ফলে পেট বড় হয়ে যায়। দ্বিতীয়ত, এটি দাম্ভিকতার আলামত। আবু হুজাইফা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-এর দরবারে ছিলাম।

তিনি এক ব্যক্তিকে বলেন, আমি টেক লাগানো অবস্থায় কোনো কিছু ভক্ষণ করি না।’ (বুখারি, হাদিস : ৫১৯০, তিরমিজি, হাদিস : ১৯৮৬)

খাবারের দোষ-ত্রুটি না ধরা : রাসুল (সা.) কখনো খাবারের দোষ ধরতেন না। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) কখনো খাবারের দোষ-ত্রুটি ধরতেন না। তাঁর পছন্দ হলে খেতেন আর অপছন্দ হলে পরিত্যাগ করতেন। (বুখারি, হাদিস : ৫১৯৮, ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৩৮২)

খাবারে ফুঁ না দেওয়া : খাবারের মধ্যে ফুঁ দেওয়া অনেক রোগ সৃষ্টির কারণ। রাসুল (সা.) খাবারে ফুঁ দিতে নিষেধ করেন। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) কখনো খাবারে ফুঁ দিতেন না। ফুঁ দিতেন না কোনো কিছু পানকালেও। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৪১৩)

খাবারের শেষে দোয়া পড়া : খাবার খাওয়া শেষ হলে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করা অপরিহার্য। রাসুল (সা.) খাবার শেষে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানাতেন। দোয়া পড়তেন। আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) খাবার শেষ করে বলতেন, ‘আলহামদু লিল্লাহি হামদান কাসিরান ত্বয়্যিবান মুবারাকান গাইরা মাকফিয়্যিন ওয়ালা মুয়াদ্দায়িন ওয়ালা মুসতাগনান আনহু রাব্বানা।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩২৮৪)