মুখে বা জিহ্বায় ঘা হতে পারে কোন মারণব্যধির সংকেত !

1903

মুখে ঘা হওয়াকে খুব বড় সমস্যা মনে করেন না অনেকেই। শরীরের নানা কারণ ও নানা সমস্যায় মুখে ঘা হতে পারে। কিন্তু এই ঘা থেকেই হতে পারে আরো জটিল ধরনের সমস্যা।

তবে চিকিৎসকরা বলেন, অল্প ব্যথা ও জ্বালা হলে সচেতন হতে হবে কারণ বেড়ে গেলে নিয়ন্ত্রণ করাও কঠিন। সাধারণত এমন হলে প্রাথমিক অবস্থায় কেউ সমস্যা বুঝতে পারে না।

বর্তমানে মরণ রোগ এইডস থেকে শুরু করে ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, এমনকি গর্ভাবস্থায়ও শরীরে বাসা বাঁধা অনেক রোগের লক্ষণ মুখের ভেতরেই প্রকাশ পায়। চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুযায়ী, প্রায় ২০০ রোগের প্রাথমিক লক্ষণ প্রকাশ পায় মুখগহ্বরের ঘা’র মাধ্যমে।

মুখের ভেতরের মাংসে বা জিহ্বায় ঘা হয়, ব্যথা করতে থাকে, কিছু খেতে গেলে জ্বলে যাওয়ার মানে হচ্ছে মুখে ঘা এর প্রাথমিক লক্ষণ। অনেকেরই এসবের সঙ্গে সঙ্গে মুখ ফুলে যাওয়া বা পুঁজ বের হওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

সাধারণত, মুখে গালের ভেতরের অংশে বা জিভে ঘা হয় কোনও ভাবে কেটে গেলে। আবার শক্ত ব্রাশ দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করলেও এ সমস্যা দেখা দেয় অনেকের।

খুব গরম পানীয় পান করলে বা কিছু চিবাতে যেয়ে গালের ভেতরে কামড় লাগলেও ঘা হতে পারে। এইসব অতি সাধারণ কারণ ছাড়াও মুখের ঘা নানা মারণব্যধির কারণে হতে পারে।

যাদের ডায়াবেটিস বা হৃদরোগ আছে এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এবং দীর্ঘদিন ওষুধ খাচ্ছেন, তাদের মুখেও এক ধরনের জীবাণু বাড়তে থাকে।

সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা যায় যে, যাদের ধূমপান এবং জর্দা দিয়ে পান ইত্যাদি খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে তাদের মধ্যে মুখের ঘা খুব বেশি হয় এবং সেই সঙ্গে মুখে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি।

বিশেষত যারা পানের সঙ্গে জর্দা খান এবং অনেকবার পান খান তাদের মুখের ঘা বেশি থাকে। সাধারণ ক্ষেত্রে আয়রন বা ভিটামিন বি-১২’র অভাবেই এ সমস্যা বেশি হয়।

সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া খুব জরুরি। যেমন- ফল, শাক-সবজি, দুধ, মাছ এবং চর্বি ছাড়া মাংস।

এ সব খাবারে প্রচুর পরিমাণ জিঙ্ক, ভিটামিন ও আয়রন থাকায় মুখের ঘা সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সঙ্গে নিয়মিত মাউথ ওয়াশ ব্যবহারের অভ্যাস করুন।

মুখ খুবই স্পর্শকাতর অংশ। তাই নিজে নিজে ওষুধ ব্যবহার করতে যাবেন না। যা করবেন তা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী। সব চাইতে জরুরি বিষয় হল চিকিৎসার পরও মুখের ঘা যদি দু’সপ্তাহ থেকে তিন সপ্তাহ স্থায়ী হয়, তবে অবশ্যই বায়োপসি বা মাংসের টিস্যু পরীক্ষা করে দেখতে হবে।

কারণ মুখের বেশ কিছু ঘা বা সাদা ক্ষতকে বিজ্ঞানীরা প্রি-ক্যান্সার লিশন বা ক্যান্সারের পূর্বাবস্থার ক্ষত বলে থাকেন। সুতরাং মুখের ঘা প্রতিরোধে দাঁত ও মুখের যত্ন নেবেন এবং মুখের ভিতরের অংশে ঘা হওয়া মাত্রই চিকিৎসার ব্যবস্থা নিন।