
সকাল বেলা ভারী নাস্তা খেতে হয়। তবে শুরুতেই ভারী খাবার না খেয়ে সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথমে হালকা গরম পানি ও হালকা কোনো খাবার খেতে হবে। এর ঘণ্টাখানেক পর ভারী খাবার খেতে পারেন।
আসুন জেনে নেই যেসব খাবার খালি পেটে খেলেই বেশি উপকার পাওয়া যাবে-
১. মধু- প্রাচীনকাল থেকেই ঔষধ হিসেবে মধু ব্যবহৃত হয়ে আসছে। প্রতিদিন সকালে মধু খেলে ওজন কমে।



বিশেষ করে সকালে খালি পেটে হালকা গরম জলে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খেলে তা ওজন কমাতে সাহায্য করে কিছুদিনের মধ্যেই। এছাড়াও এতে লিভার পরিস্কার থাকে। যারা মিষ্টি জাতীয় কিছু খেতে পছন্দ করেন, তারা অন্য মিষ্টি খাবারের বদলে মধু খেতে পারেন। শরীরের দুর্বলতা ও চা-কফির নেশা কমায় মধু।
২. কাঠ বাদাম- কাঠ বাদাম আগের দিন রাতে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকাল বেলা পানি ঝরিয়ে বাদাম খেতে হবে। এতে অনেক বেশি ভিটামিন ও মিনারেলস পাবেন।



কাঠ বাদাম বা আমন্ড নিয়ম করে প্রতিদিন খেলে সারাদিন সতেজ থাকতে পারবেন। শরীরে দুর্বলতা আসবে না। অনেকে মনে করেন, কাঠবাদাম চর্বিতে পূর্ণ একটি খাবার এবং এটি ওজন বাড়িয়ে দেয়। এই ধারণা সঠিক নয়।
৩. আমলকি- আমলকির উপাকারিতা তো আমরা প্রায় সবাই জানি। তাই আমলকি থেকে তৈরি করা জুসেরও রয়েছে সমান উপকারিতা। আমলকির জুস লিভারের কার্যক্রম ভালো রাখে, হৃদপিণ্ড ভালো রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এর আছে আরো অনেক গুণ।



খালি পেটে আমলকির জুস খেতে পারলে আয়ু বৃদ্ধি পাবে। আমলকিতে ভিটামিন সি রয়েছে। এতে ত্বক পরিষ্কার হবে, চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে ও চোখ ভালো থাকবে। তবে আমলকির জুস খাওয়ার ৪৫ মিনিটের মধ্যে কোনোভাবেই চা বা কফি খাওয়া যাবে না।
৪. পেঁপে- কাঁচা অবস্থায় পেঁপে সবজি আর পাকা অবস্থায় ফল। পেঁপেতে ক্যালোরির পরিমাণ কম এবং পুষ্টি বেশি বলে যারা ওজন সমস্যায় ভুগছেন তাঁরা পেপে খেতে পারেন নিয়মিত। খালি পেটে পাকা পেঁপে খেতে পারেন। পেঁপে হজম শক্তিকে বৃদ্ধি করবে ও পেট পরিষ্কার রাখবে। সেই সঙ্গে এটা কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করবে। অপথ্যালমোলজি আর্কাইভস প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রতিদিন তিনবার পেঁপে খেলে চোখের বয়সজনিত ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।



৫. তরমুজ- গরম যতই পড়ুক, এই সময়ের রসালো সব ফলের দিকে তাকিয়ে গরমটা সহ্য করে নেয়াই যায়। তেমনই একটি ফল তরমুজ। তরমুজ গ্রীষ্মকালীন একটি জনপ্রিয় ফল। গরমে তরমুজ দেহ ও মনে শুধু প্রশান্তিই আনে না এর পুষ্টি ও ভেষজগুণ রয়েছে অনেক। তরমুজ খালি পেটে খেতে পারেন। কারণ তরমুজে থাকে ইলেকট্রলাইট। যা সারারাতের পানির অভাব পূরণ করতে সাহায্য করে। এতে ক্যালরি খুবই কম থাকে।
৬. খেজুর- খেজুর অত্যন্ত ক্যালরিবহুল একটি খাবার। এটি বিভিন্ন ভিটামিন, মিনারেলস ও আঁশসমৃদ্ধ। এই ভিটামিনগুলোর মধ্যে রিবোফ্লাবিন, নায়াসিন, থায়মিন ইত্যাদি।



ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে খেজুর খেতে পারেন। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা কোষ্ঠকাঠিণ্য দূর করতে পারে। খেজুর হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। ডায়রিয়া বা পেট খারাপ এই ধরণের কোনো সমস্যা থাকে না। কারণ খেজুরের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে।
পরপর ২ দিন গোসল না করলে কী হয় শরীরে? জানলে আঁতকে উঠবেন
প্রতি দিন ভালো ভাবে গোসল করা সকলেরই অভ্যাস। কিন্তু অনেক সময়ে কাজের চাপে গোসল বাদ দিতে হয় দৈনন্দিন কাজের রুটিন থেকে। ঠান্ডার দিনেও অনেকে পর পর কয়েক দিন গোসল ছাড়াই কাটিয়ে দেন। কিন্তু এই ভাবে গোসলহীন অবস্থায় কাটানোর কী প্রভাব পড়ে শরীরে?



তা হলে জেনে রাখুন, দীর্ঘ দিন গোসল না করে কাটানো তো দূরস্ত, পর পর দু’দিন গোসল না করলেই তার গুরুতর কু-প্রভাব পড়ে শরীরে। এমনটাই জানাচ্ছে, ‘টুয়েন্টি টু ওয়ার্ডস’নামের লাইফস্টাইল জার্নালে প্রকাশিত সাম্প্রতিক একটি গবেষণাপত্র। ডাক্তার এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতামত সম্বলিত এই গবেষণাপত্রে জানানো হচ্ছে, পর পর দু’দিন গোসল না করলে কী ক্ষতি হয় শরীরের। আসুন, জেনে নেওয়া যাক—
১। গোসল না করার ফলে প্রথম যে সমস্যাটি দেখা দেয়, সেটি ব্যাকটেরিয়া-ঘটিত। মানবশরীরে প্রায় ১০০০ রকমের ব্যাকটেরিয়া বাসা বেধে থাকে, তার মধ্যে রয়েছে ৪০ রকমের ফাঙ্গাসও। এগুলির মধ্যে অধিকাংশই ব্যাকটেরিয়াই অবশ্য শরীরের পক্ষে উপকারী,



কিন্তু যেগুলি ক্ষতিকর সেগুলিকে সাবানের মাধ্যমে ধুয়েই ফেলাই যুক্তিযুক্ত। গোসল না করলে শরীরে সাবানের স্পর্শ লাগে না। ফলে শরীরে ব্যাকটেরিয়াগুলো থেকেই যায়। সেটা অবশ্যই ক্ষতিকর। পর পর দু’দিন গোসল না করলে সেই ক্ষতিকরতা বৃদ্ধি পায়।
২। এই সমস্ত ব্যাকটেরিয়া যদি কোনও ভাবে আপনার নাক, কান বা মুখে চলে যায়, তা হলে আপনার অসুস্থ হয়ে পড়ার গুরুতর সম্ভাবনা থেকে যায়।
৩। ব্যাকটেরিয়াই শরীরের দুর্গন্ধের প্রধান কারণ। গবেষণা জানাচ্ছে, শরীরে বাসা বেধে থাকা একটি ব্যাকটেরিয়া ৩০ রকমের দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস সৃষ্টি করে। কাজেই দু’দিন গোসল করলে এই দুর্গন্ধ যে আরও বাড়বে, তা বলাই বাহুল্য।



৪। পর পর দু’দিন গোসল না করার আর একটা সমস্যা হল, চামড়ার উপর একটি তৈলাক্ত আবরণ তৈরি হয়। এই আবরণ চর্মরোগের কারণ হয়। নিয়মিত গোসল করলে এই বিপদ এড়ানো যায়।
৫। চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ হোলি এইচ. ফিলিপস জানাচ্ছেন. ঘামে-ভেজা জামাকাপড় দীর্ঘক্ষণ পরে থাকলে ব্যাকটেরিয়া এবং ফাংগাস ঘটিত রোগের ভয় আরও বাড়ে। এর ফলে চুলকানি কিংবা র্যাশ সৃষ্টি হয় চামড়ায়। নিয়মিত গোসল না করলে এই সমস্যার পথ রোধ করা সম্ভব।
তা হলে কোনও ভাবে কোনও কারণে কি গোসল এড়ানো যাবে না? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘ দিন গোসল না করা একেবারেই উচিৎ নয়। আর যদি দিন দু’য়েক কোনও কারণে গোসল না করে যদি থাকতেই হয়, তা হলেও বগল, কুচকি, এবং মুখ অবশ্যই ভাল ভাবে ধুতে হবে। আর পোশাক অবশ্যই একটা নির্দিষ্ট সময় বাদে বাদে পাল্টাতে হবে। তা হলে অনেকটাই কমবে বিপদের আশঙ্কা।