
দরিদ্রতা হল এমন একটি অর্থনৈতিক অবস্থা, যখন একজন মানুষের জীবন যাত্রার ন্যূনতম মান অর্জন এবং সামান্য আয়ের ফলে জীবন ধারণের অপরিহার্য দ্রব্যাদি ক্রয় করার সক্ষমতা হারায়।
ইসলামের দৃষ্টিতে দারিদ্র্য হচ্ছে এমন এক অবস্থা, যা মানব জীবনের অব্যাহত প্রয়োজনীয় পণ্য বা মাধ্যম উভয়েরই অপর্যাপ্ততা বুঝায়।



দরিদ্রতা আসে সাত জিনিসের কারণেঃ
১। তাড়াহুরা করে নামায পড়ার কারণে! ২। দাঁড়িয়ে পেশাব করার কারণে! ৩। পেশাবের জায়গায় অজু করার কারণে! ৪। দাঁড়িয়ে পানি পান করার কারণে! ৫। ফুঁ দিয়ে বাতি নিভানোর কারণে! ৬। দাঁত দিয়ে নখ কা’টা’র কারণে! ৭। পরিধেয় বস্ত্র দ্বারা মুখ সাফ করার কারণে!
সচ্ছলতা আসে সাত জিনিসের কারণেঃ
১। কুরআন তেলাওয়াত করার কারণে। ২। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার কারণে। ৩। আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করার কারণে। ৪। দরিদ্র ও অক্ষমদের সাহায্য করার কারণে। ৫। গোনাহের ক্ষমা প্রার্থনা করার কারণে। ৬। পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সদাচরণ করার কারণে। ৭। সকালে সূরা ইয়াসিন এবং সন্ধ্যায় সূরা ওয়াকিয়া তেলাওয়াত করার কারণে।



হারাম উপার্জন সন্তানের ওপর প্রভাব ফেলে
ইসলাম ধর্মমতে সব ধরনের ইবাদত-বন্দেগি কবুল হওয়ার জন্য রিজিক হালাল হওয়া জরুরি। হালাল রিজিকের প্রভাব শুধু নিজের দুনিয়া ও আখেরাতের সৌভাগ্যের জন্যই যে জরুরি তা নয়, নিজের সন্তানের ওপরও এর প্রভাব থাকে। রুজি-রোজগারে খুব সামান্য, এমনকি বিন্দু পরিমাণ হারামের প্রভাব সন্তানের মাঝে প্রকাশ পায়।
মানুষ হিসেবে আমরা ভুল-ক্রুটির ঊর্ধ্বে নই। ইচ্ছায়-অনিচ্ছায়, জেনে না জেনে আমাদের থেকে ভুল আচরণ প্রকাশ পেতেই পারে। আমাদের জীবনে যদি এ জাতীয় ঘটনা ঘটে থাকে।



অর্থাৎ আমরা যদি অন্যের কোনো কিছু ভোগ করে থাকি বিনা অনুমতিতে এবং এ জন্য পরে মালিকের সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা না করি তা হলে অবিলম্বে ক্ষমা বা তার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্যোগ নেওয়া উচিত। যদি মালিক মা’রা গিয়ে থাকেন তা হলে তার সন্তানদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। আর যদি তাদের কাউকেই পাওয়া সম্ভব না হয় তা হলে ওই পরিমাণ সম্পদ তাদের নামে সদকা দেয়া উচিত। সেই সঙ্গে তওবাও করতে হবে, ভবিষ্যতে এ কাজ আর না করার।
বস্তুত আল্লাহর প্রতি দৃঢ়-বিশ্বাস ও ভরসা করাই হচ্ছে খাঁটি মুমিনের বৈশিষ্ট্য। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে কারিমে বলা হয়েছে, ‘তোমরা মন-ভা’ঙ্গা হয়ো না, হীনবল হয়ো না, তোমরাই বিজয়ী হবে যদি তোমরা মুমিন হও।’



আল্লাহ তায়ালা সূরা ইবরাহিমে আরও বলেছেন, ‘যদি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করো, তবে তোমাদেরকে আরও দেব এবং যদি অকৃতজ্ঞ হও তবে নিশ্চয়ই আমার শা’স্তি হবে ক’ঠোর।’ তাই সর্বাগ্রে আল্লাহর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। আমাদের প্রচেষ্টা যদি আন্তরিক হয়, আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে আমাদের কার্যক্রম পরিচালিত হয় তা হলে আশা করা যায়, আল্লাহ তায়ালা আমাদের সমস্ত বৈধ বাসনা পূরণ করবেন, আমাদের দোয়া সমূহ কবুল করবেন।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সব স’ম’স্যা’র সমাধান দিতে পারেন এই দৃঢ়-বিশ্বাস আমাদের রাখা উচিত। আন্তরিক ভাবে আল্লাহর কাছে পথ-নির্দেশনা কামনা করলে, আল্লাহ অবশ্যই তা কবুল করবেন।



আল্লাহর মর্জি হলে, যা ঘটা আপাত দৃষ্টিতে অসাধ্য বলে মনে হয় তাও সাধন সম্ভব। অনেক খোদা ভীরু ব্যক্তির কথা জানা যায়, যারা ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ বলে নদীর পানির ওপর দিয়ে এমন ভাবে হেঁটে নদী পার হয়েছেন যেভাবে আমরা পার হই মাটির রাস্তা।
আল্লাহর প্রিয় পাত্রদের জন্য এসব খুবই সাধারণ ঘটনা। তার মানে এটা নয় যে, সবাইকে পানির ওপর দিয়ে হেঁটে যেতে হবে। বিষয়টি শুধু শিক্ষা অর্জনের জন্য উল্লেখ করা হলো। আমাদের সন্তানরা ভালো থাকুক, এটা সবারই কাম্য। কিন্তু তাদের ভালো রাখতে যেয়ে, শান্তি নিশ্চিত করতে তাদের মুখে হারাম খাবার, গায়ে হারাম পোষাক দেওয়া ঠিক হবে না। এটা তাদের ভবিষ্যতকে ধ্বং’স করারই নামান্তর।