স্বাস্থ্য রক্ষায় ভাতের মাড়ের অকল্পনীয় ৫ উপকারিতা

1580

যতই ফাস্ট ফুডের রমরমা থাকুক, বাঙালির এক বেলা ভাত না হলে চলে না। আর ভাত রান্না করলে ভাতের মাড় তো পাওয়া যাবেই। ভাতের মাড় ব্যবহার সাধারণত কাপড় কাচার জন্য ব্যবহার করা হয়।
প্রতিদিনই সবার বাসায় ভাত রান্না হয়।

কিন্তু কয়জন রান্নার পর সে মাড় রেখে দেন। সাধারণত অপ্রয়োজনীয় ধরে নিয়ে ফেলেই দেন সবাই। ফলে চালের যা গুণাগুণ তার সিংহভাগই চলে যায় সেই পানির সঙ্গে। কিন্তু, জানেন কি ভাতের মাড়ে রয়েছে ‘বিউটি সিক্রেট’? নানা ভিটামিন ও মিনারেলে পরিপূর্ণ।

চলুন জেনে নেই ভাতের মাড়ের উপকারিতার কথা-

ত্বকে জৌলুস আনে : দিন দিন যাঁদের ত্বক ঔজ্জ্বল্য হারাচ্ছে, তারা মুখে ভাতের মাড় মাখতে পারেন। প্রথমে উষ্ণ গরম পানিতে মুখে ধুয়ে নিন। তারপর তুলোয় করে সারা মুখে ভাতের মাড় মাখুন। কিছুক্ষণ রেখে, মুখ ধুয়ে নিন। এতে ত্বকের জৌলুস ফেরার পাশাপাশি ত্বক টানটানও হবে। তাই মুখের বলিরেখা ঠেকাতে এটি ব্যবহার করতে পারেন।

চুল ভালো রাখে : চুলে শ্যাম্পু করার পর ভাতের মাড় দিয়ে মাথাটা ভালো করে ঘষে নিন। কয়েক মিনিট এ অবস্থায় রেখে দিয়ে, পানিতে ভালো করে চুল ধুয়ে নিন। কিছুদিনের মধ্যেই চুল হয়ে উঠবে মসৃণ, ঝলমলে। যাদের চুলের আগা ফেটে যাচ্ছে, তারাও উপকৃত হবেন।

একজিমার ওষুধ চালের পানি : যেখানে একজিমা হয়েছে, চালের পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন। যত দিন না সম্পূর্ণ ভালো হচ্ছে, লাগিয়ে যেতে হবে।

ত্বকের জ্বালা ও প্রদাহের চিকিৎসায় : কিছুটা চাল টগবগ করে ফুটিয়ে নিয়ে সেই পানিটা একটা পাত্রে রেখে দিন। গায়ে বা শরীরের কোথাও র‌্যাশ বেরোলে, অন্তত ১৫ মিনিট চুবিয়ে রাখুন। ফল পাবেন।

ডায়েরিয়ার ওষুধ : ডায়েরিয়ায় ভুগলে এক গ্লাস ভাতের মাড়ে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে খেয়ে নিন। ঝটপট পেট ঠিক হয়ে যাবে।

ভাতের মাড়ে রয়েছে ৮টি জরুরি অ্যামাইনো এসিড। পেশি পুনর্গঠনে সাহায্য করে। এতে থাকা কার্বোহাইড্রেট এনার্জির জোগান দেয়। ফলে, এরপর ভাতের মাড় ফেলে না দিয়ে, কাজে লাগান।

ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় গ্লিসারিন

ত্বকের দৈনন্দিন যত্নের জন্য বাজার চলতি ময়শ্চারাইউজার বা বডি লোশনে আস্থা রাখতে হচ্ছে। ত্বক স্পর্শকাতর বলেই কিছু দিন অন্তর অন্তর ময়শ্চারাইজার নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে থাকে প্রসাধনী সংস্থাগুলো। তবে একটু খেয়াল করলেই দেখবেন, যেসব ময়শ্চারাইজারে ভরসা রাখেন, তার বেশির ভাগেরই মূল উপাদান গ্লিসারিন।

বডি লোশন, লিপ বাম ও বডি অয়েলেও গ্লিসারিনের উপস্থিতি রয়েছে। তাই গ্লিসারিনকে বাদ দিয়ে রূপচর্চার কথা ভাবাই যায় না। ত্বককে ভরপুর আর্দ্রতা তো দেয়ই সঙ্গে ত্বককে নরম রাখে এবং দীর্ঘ সময় ধরে তার জেল্লা ধরে রাখতেও সাহায্য করে এই গ্লিসারিন।

রূপবিশেষজ্ঞদের মতে, গ্লিসারিন সব ধরনের ত্বকের সঙ্গেই খাপ খাইয়ে নিতে পারে। শুধু শীত নয়, সারাবছরই গ্লিসারিন প্রয়োজন হয় ত্বকের। কেবল শুষ্ক ত্বকের জন্য নয়, তৈলাক্ত ত্বকেও কাজে আসে এই গ্লিসারিন।

ঠিক কী কী কারণে গ্লিসারিনযুক্ত উপাদান ব্যবহার করবেন ত্বকে, তা জেনে নেওয়া যাক-

১- ত্বকের আর্দ্রতাকে গভীরে ধরে রাখতে সাহায্য করে গ্লিসারিন। এ ছাড়া গ্লিসারিনের প্রভাবে বাতাসের আর্দ্রতাকেও টানতে পারে ত্বক। যার ফলে ত্বক নরম থাকে।

২- ব্রণ সমস্যার অন্যতম সমাধান হলো গ্লিসারিন। এর অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল উপাদান মুখের ব্রণ ও ব্ল্যাকহেডস কমাতে সাহায্য করে।

৩- গ্লিসারলের অভাব দেখা দিলে ত্বক শুষ্ক হয় ও বয়স্ক দেখায়। তাই নিয়মিত গ্লিসারিনের পরিচর্যা নিলে ত্বক সতেজ ও সুন্দর থাকবে।

৪- ত্বক খুব শুষ্ক হলে তা ফেটে যায় এবং টানতে থাকে। গ্লিসারিন ত্বকের সেই প্রদাহ কমিয়ে তা নরম রাখতে সাহায্য করে।

৫- কোষকে অপরিণত রেখে ত্বককে তরুণ রাখে গ্লিসারিন।

তাই সারা বছরই ত্বকে ব্যবহার করুন গ্লিসারিন। আরাম তো পাবেনই, উজ্জ্বলতাও আসবে ত্বকে।