
মাঝে-মধ্যেই আমরা হাতে বা পায়ে ঝিঁঝি ধরার শিকার হই। সাধারণত পা বা হাতের ওপর লম্বা সময় চাপ পড়লে সাময়িক যে অসাড় অনুভূতি তৈরি হয় সেটিকেই আমরা ঝিঁঝি ধরা বলে থাকি।
এই উপসর্গটিকে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয় ‘টেম্পোরারি প্যারেসথেসিয়া’। এটিকে ইংরেজিতে ‘পিনস অ্যান্ড নিডলস’ও বলা হয়ে থাকে।



শরীরের কোনো অংশে ঝিঁঝি ধরলে সাধারণত কিছুক্ষণের মধ্যেই অসাড়তা এবং খোঁচা লাগার মত অস্বস্তিকর অনূভুতি চলে গিয়ে স্বাভাবিক অনুভূতি ফিরে আসে।
যেভাবে ঝিঁঝি ধরতে পারে:
হাত বা পা এমন অবস্থানে বেশ কিছুক্ষণ থাকে যেখানে সেটির ওপর লম্বা সময় ধরে চাপ পড়ে তখন ঝিঁঝি ধরে। উচ্চ র’ক্ত’চাপের রোগীদের বা ডায়বেটিস আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় ঝিঁঝি ধরার মত ঘটনাও ঘটে থাকে।



ঝিঁঝি কেন ধরে?
বিষয়টি কিছুটা রহস্যজনক মনে হলেও এর পিছনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাটা রয়েছে। আমাদের দেহের সব জায়গাতেই অসংখ্য স্নায়ু রয়েছে যেগুলো মস্তিষ্ক ও দেহের অন্যান্য অংশের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করতে থাকে।
বসা বা শোয়ার সময় সেসব স্নায়ুর কোনো একটিতে চাপ পড়লে দেহের ঐ অংশে রক্ত চলাচলকারী শিরার ওপরও চাপ পড়ে। ফলে শরীরের ঐ অংশে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। এর ফলে ঝিঁঝি ধরতে পারে।



যেসব ক্ষেত্রে দীর্ঘক্ষণের জন্য ঝিঁজি হতে পারে:
১. কেমোথেরাপির মত চিকিৎসার ক্ষেত্রে।
২. এইচআইভি’র ওষুধ, খিঁচুনির ওষুধ বা বিভিন্ন ধরণের অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে।
৩. সীসা বা রেডিয়েশনের মত বিষাক্ত বস্তুর সংস্পর্শে এলে।
৪. পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবারের অভাব হলে।



৫. স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হলে- বিশেষ করে কোনো অসুস্থতা বা আঘাতের পর।
৬. অতিরিক্ত ম’দ্য’পানের ফলে।
৭. বিশেষ ক্ষেত্রে চেতনানাশক ব্যবহারের পর।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?
দীর্ঘ সময় ঝিঁঝি ধরার মত উপসর্গ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। ঝিঁঝি ধরার মত উপসর্গ যদি দীর্ঘসময় ধরে হতে থাকে তাহলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন। এছাড়া কোনো অঙ্গে নিয়মিত ঝিঁঝি ধরার ঘটনা ঘটলে বা বারবার ঝি ঝি ধরার ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।