‘হাদিসে আছে কেয়ামতের আগে একটি রোগ সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে’

2166

করোনা ভাইরাস এখন বিশ্ব ম’হা’মা’রী। দিন দিন বাড়ছে এ ভাই রাসে আ’ক্রা’ন্তে’র সংখ্যা। একইসঙ্গে মানুষের ভেতরও ছড়াচ্ছে আ’ত’ঙ্ক। বিচ্ছিন্ন হচ্ছে এক দেশ থেকে আরেক দেশ।

বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাসে চার হাজার ৬০০ জন মা রা গেছে। আর বিশ্বের ১১৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়েছে এই ভাই রাস। আ’ক্রা’ন্তে’র সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় সোয়া লাখে।

এমন অবস্থায় বিভিন্ন ধর্মের মানুষরা এর ব্যাখ্যা দিতে শুরু করেছেন। কেউ কেউ বলছেন, পৃথিবীর ধ্বং’স অনিবার্য হয়ে উঠেছে।

ইসলাম ধর্মের অনেক অনুসারী ব্যাখ্যা তুলে ধরে বলেছেন। তারা হাদিসে বর্ণিত একটি অসুখের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, পৃথিবী শেষ হওয়ার আগে একটি রোগ সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে।

আবার অনেকে বলছেন, কেয়ামতের আগে কাবায় ‘তাওয়াফ’ বন্ধ হবে। এই ঘটনার সঙ্গে চলমান করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে কাবায় ওমরাহ বন্ধের তুলনা করেছেন তারা।

আবার অনেকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বারবার হাত ধোয়ার পরামর্শকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার আগে ওযু করার সঙ্গে মিলিয়েছেন।

অপরদিকে হিন্দু ধর্মের অনেক অনুসারীও করোনা নিয়ে তাদের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। অল ইন্ডিয়া হিন্দু মহাসভার সভাপতি স্বামী চক্রপাণি এই ভা’ইরাসকে একটি ‘রাগী দেবতা’ বলে অভিহিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘করোনা এটা ভা’ইরাস নয়। এটা নিরীহ প্রাণীকে রক্ষার অবতার। যারা এদের ভক্ষণ করেন, তাদের মৃ’ত্যু ও সাজার শাস্তি শোনাবার জন্য এরা এসেছে।’

আবার কেউ বাইবেলের উক্তি তুলে ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘এমন একটি সময় আসবে যখন একটি রোগে অনেক মানুষ মা’রা যাবে।’

ম’হা’মা’রি ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে একেক ধর্মের অনুসারীরা নানাভাবে ব্যাখ্যা করছেন। তবে এ নিয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা আ’ত’ঙ্কি’ত না হতে পরামর্শ দিয়েছেন।

তবে এর আগেও পৃথিবীতে প্রা’ণ’ঘা’তী আরো রোগ ভ’য়া’ব’হ আকারে ছড়িয়েছিলো। যেমন চতুর্দশ শতকে প্লেগে ইউরেশিয়া অঞ্চলের কমপক্ষে সাড়ে সাত কোটি থেকে ২০ কোটি মানুষ মা’রা যায়। এই প্লেগকে বলা হতো ‘ব্ল্যাক ডেথ’। এটি ইঁদুর থেকে ছড়িয়েছিলো।

১৯১৮ সালে ‘স্প্যানিশ ফ্লু’ নামে পরিচিত ইনফ্লুয়েঞ্জা ৫০ কোটি মানুষকে আ’ক্রা’ন্ত করে। যাতে ১.৭ কোটি থেকে ৫ কোটি মানুষ মা’রা যায়।

করোনাভা’ইরাস মোকাবিলায় জনস্বার্থে আইনের প্রয়োগ বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) জারি গণবিজ্ঞপ্তিতে সর্বোচ্চ সতর্কতার অংশ হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদফতর ‘সং’ক্রা’ম’ক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮’ প্রয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, আইন অনুযায়ী কোন এলাকায় কেউ যদি সং’ক্রা’ম’ক রোগে আ’ক্রা’ন্ত হয়েছেন বলে প্রতিমান হয় বা কেউ সংক্রামক রোগে মৃ’ত্যু’ব’র’ণ করেন বা কোনও ব্যক্তি, কোনও বাসগৃহ, প্রাঙ্গণ বা এলাকায় সংক্রামক রোগের অস্তিত্ব সম্পর্কে অবহিত হন, তাহলে তাকে বিষয়টি দ্রুত সংশ্লিষ্ট সিভিল সার্জনকে অবহিত করতে হবে। না হলে তিনি আইনের চোখে অপরাধী।

একইভাবে স্বাস্থ্য অধিদফতর সংক্রামক রোগের আ’ক্রা’ন্ত হয়েছেন এমন কোনও সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট হাসপাতাল, অস্থায়ী হাসপাতাল, স্থাপনা বা গৃহে অন্তরীণ রাখা বা পৃথকীকরণ করতে পারবেন।

প্রয়োজনে কোন এলাকাকে সংক্রমিত এলাকা ঘোষণা করতে পারবেণ। রোগের বিস্তার রোধে যানবাহন, দেশে আগমন, নির্গমন বা দেশের অভ্যন্তরে এক স্থান হতে অন্য স্থানে চলাচল নিষিদ্ধ করতে পারবেন।

কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বিদেশ থেকে প্রত্যাগত কিছু প্রবাসী বা তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিবর্গ স্বাস্থ্য অধিদফতর কর্তৃক আরোপিত কোয়ারেন্টাইনের শর্ত সঠিকভাবে প্রতিপালন করছেন না। অনেকেই মিথ্যা তথ্য ও গু’জ’ব রটিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। তাই স্বাস্থ্য অধিদফতর সবাইকে আইন অনুযায়ী দায়িত্ব পালনের অনুরোধ করেছে এবং আইন মানতে ব্যর্থ হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে।