
মাথায় হিজাব পরে সমাবর্তনে ডিগ্রি নিতে গিয়েছিলেন ভারতের পন্ডিচেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। এমন সময় নি’রা’প’ত্তা বাহিনী সদস্যরা তাকে হিজাব খুলতে বলেন। কিন্তু তাতে রাজি হননি ওই ছাত্রী। তারপরে নি’রা’প’ত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাকে সমাবর্তনস্থলের বাইবে বসতে বলেন বলে অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী।



ভারতের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, পন্ডিচেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। তার হাত থেকেই সাফল্যের পুরস্কার নিতে গিয়েছিলেন রাবিহা। কিন্তু সেই সময় অনুষ্ঠানে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি তাকে। কারণ সেই হিজাব।
রাবিহা গণমাধ্যমকে বলেছেন, রাষ্ট্রপতি আসার কিছুক্ষণ আগেই তিনি অডিটরিয়ামে ঢুকতে যান। কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীরা তাকে বাধা দেয়। বলা হয় হিজাব খুলতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমার সঙ্গে যে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে তার প্রতিবাদেই আমি পদক নিতে অস্বীকার করি।



প্রেসিডেন্ট অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করার পর তাকে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয় বলে জানান এই সেরা ছাত্রী। এই ঘটনায় অত্যন্ত অপমানিত বোধ করেছেন তিনি।
এদিকে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই সমালোচনা শুরু হয়ে যায়। মোদি সরকারের এমন বিভেদের রাজনীতি নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই উত্তাল গোটা ভারত। তারপরে পন্ডিচেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘটনা সেই উত্তেজনা আরও জোরদার করে দিলো বলে মনে করছেন সবাই।



এবছরই পাঁচ রাজ্যে হারলো মোদির দল
ভারতের আরও একটি রাজ্য পরাজয় ঘটলো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপির। এক বছর আগেও গোটা ভারতে বিজেপি ৭০ শতাংশের বেশি রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল। মাত্র এক বছরের মধ্যেই সেই সংখ্যা নেমে এসেছে ৪০ শতাংশে। ৬০ শতাংশের বেশি রাজ্য এখন অবিজেপি দলদগুলির হাতে চলে গিয়েছে। সোমবার ঝাড়খণ্ডে পরাজিত হওয়ার মাধ্যমে গত এক বছরের মধ্যে ভারতের পাঁচটি রাজ্যে ক্ষমতা হারাল বিজেপি।
২০১৮ সালে ভারতের কেন্দ্রীয় ক্ষমতাসীন দল বিজেপি রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড়ে হেরে যায়। তারপর অবশ্য সেই হার সামাল দিয়ে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বিপুল জন সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসে বিজেপি।



কিন্তু লোকসভা ভোটের পর তিন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনেও বিজেপিকে মুখ থুবড়ে পড়তে হয়। তার মধ্যে দুটি রাজ্যের দখল হারায় বিজেপি। সেই কারণেই এক বছর আগে যেখানে ভারতের ৭০ শতাংশ রাজ্যে বিজেপির নিয়ন্ত্রণ ছিল, এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশে। বিহার ও দিল্লিতেও ভোট আসন্ন।
নতুন বছরের শুরুতেই এই দুই রাজ্যের ভোট নিয়ে স্বভাবতই চাপে থাকবে বিজেপি। লালু প্রসাদের দল আরজেডি সাফ জানিয়ে দিয়েছে ঝাড়খণ্ডের ফলাফল বিহারের ভোটেও প্রভাব ফেলবে। আর কংগ্রেস বলেছে, দিল্লিতেও বিজেপির একইরকম পরিণতি হবে। গত এক বছরে পরাজয় ঘটে যাওয়া পাঁচ রাজ্যের মধ্যে তিনটি রাজ্যেই ক্ষমতায় ছিল বিজেপি। সেই তিনটি রাজ্য হল মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় ও রাজস্থান।



এই তিন রাজ্যেই বিজেপির কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয় কংগ্রেস। বাকি দুই রাজ্য তেলেঙ্গানা ও উড়িশ্যায় ক্ষমতায় ছিল আঞ্চলিক দলগুলি। তারাই ক্ষমতায় ফেরে আবার। সেখানে বিজেপি তাদের কোনও প্রভাব ফেলতে পারেনি।
এর আগে চলতি বছরের মে মাসে লোকসভা নির্বাচনের জিতে দ্বিতীয় বারের মতো ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। এরপর চলতি বছরের অক্টোবরে মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানা রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনেও আশাতীত সাফল্য পায়নি বিজেপি। হরিয়ানায় ভোটে হেরে কোনরকমে ম্যানেজ করে সরকার গড়ে বিজেপি। হাত থেকে ছিটকে যায় মহারাষ্ট্র। এবার ঝাড়খণ্ডেও একই পরিস্থিতি হল বিজেপির। কংগ্রেস জোটের কাছে ধ’রা’শা’য়ী হতে হল মোদির দলকে।