৩৩৩ এ কল করে খাদ্য চাওয়ায় চেয়ারম্যানের মার খেলেন বৃদ্ধ কৃষক !

1290

সরকারি সহায়তার হটলাইন ৩৩৩ নম্বরে কল করে দরিদ্র প্রতিবেশিদের জন্য ত্রাণ সহায়তা চাওয়ার কারনে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের বেদম মা’র’ধ’রে’র শি’কা’র হয়েছেন নাটোরের লালপুর উপজেলার কৃষক শহিদুল ইসলাম (৬০)। মা’র’ধ’রে’র পর “আর কাউকে কিছু বললে আরও খারাপ অবস্থা হবে” বলে হু’ম’কি দেন চেয়ারম্যান।

গত রবিবার এ ঘটনা ঘটে। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়ে।

স্থানীয়রা জানান, লালপুরের ৯নং অর্জুনপুর-বরমহাটি (এবি) ইউনিয়নের আঙ্গারিপাড়া গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলামসহ গ্রামের প্রায় ৩০০ জন করোনা ভা’ইরাসের এ সময়ে বেকার হয়ে পড়েন।

এক দিন গণমাধ্যমে কৃষক শহিদুল জানতে পারেন, ৩৩৩ নম্বরে ফোন করলে খাদ্য সহায়তা পাওয়া যায়। এরপর গত ১০ এপ্রিল ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে তিনিসহ গ্রামের সবার জন্য খাদ্য সহায়তা চান।

সেখান থেকে খাদ্য সহায়তার আশ্বাস মেলে। ৩৩৩-এর মাধ্যমে অবগত হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চেয়ারম্যানকে ওই এলাকায় ত্রাণ সহায়তার নির্দেশ দেন।

এর দু’দিন পর গত ১২ এপ্রিল স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুস সাত্তার ওই কৃষককে চৌকিদার দিয়ে ডেকে এনে নিজেই মা’র’ধ’র করেন। পরে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী কৃষক জানান, টিভি স্ক্রিনে বিজ্ঞাপনে সরকারি সহায়তার হটলাইন নম্বর ৩৩৩ দেখে আমিসহ এলাকাবাসীর ত্রাণ সামগ্রী না পাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছি। এর পরে চেয়ারম্যান আমাকে ডেকে মা’র’ধ’র করে। বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যানের লোকজনের হু’ম’কি’র মুখে আছি। এই মুহূর্তে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আবদুস সাত্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ত্রাণ চাওয়ার বিষয়টি নিয়ে একটু উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে। কৃষককে মা’র’ধ’রে’র অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।

লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মুল বানীন দ্যুতি বলেছেন, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কৃষককে মা’র’ধ’রে’র অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে এর সত্যতা পাওয়ায় চেয়ারম্যানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ঘটনার জন্য চেয়ারম্যানকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। জবাব পাওয়ার পর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এটা একটা ন্যক্কারজনক ঘটনা। চেয়ারম্যান বিষয়টি নিষ্পত্তির কথা বললে তা তিনি মিথ্যা বলেছেন।

সাহায্যপ্রার্থীকে তাড়িয়ে দেয়ায় দুই ডিলারের লাইসেন্স বাতিল

অনিয়মের অভিযোগে খাদ্য বিভাগের দুই ডিলারের লাইসেন্সসহ ডিলারশিপ বাতিল করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা খাদ্য বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা কাজী সাইফুদ্দিন অভি।

লাইসেন্স বাতিল হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- সদর উপজেলার কচুকাটা ইউনিয়নের দুহুলী এলাকার ডিলার হাবিবুর রহমান এবং চাপড়া সরমজানী ইউনিয়নের বাবড়িঝাড় এলাকার কামরুল ইসলাম।

খাদ্য বিভাগ সূত্র জানায়, সোমবার দুপুরে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় দুহুলীতে ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিক্রির সময় সুবিধাভোগীদের কাছ অতিরিক্ত অর্থ আদায় এবং বাবড়িঝাড়ে সাত জনকে চাল না দিয়ে তাড়িয়ে দেয়ার প্রমাণ পান ভ্রাম্যমাণ আদালত।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী সাইফুদ্দিন অভি জানান, শর্ত ভঙ্গের অপরাধে তাদের দুজনের লাইসেন্সসহ ডিলারশিপ বাতিল করা হয়েছে। তিনি বলেন, দুহুলীতে ৩০ কেজি চালের দাম ৩শ’ টাকার পরিবর্তে অতিরিক্ত দশ টাকা নেয় ডিলার এবং বাবড়িঝাড়ে কার্ডধারী সাত জনকে চাল না দেয়ার প্রমাণ পান ভ্রাম্যমাণ আদালত।